পৌর ভোটের মুখে ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে, নন্দীগ্রামে মমতা হারের কারণ তাঁর নিজেরই দল : সুব্রত বক্সির অডিও ক্লিপ ভাইরাল
মমতাতে কি বিশ্বাস হারাচ্ছে দল ? গুঞ্জন রাজ্য রাজনীতিতে !

মেখলা গিরি, ১২/১২/২০২১ কলকাতা : চাপা ষড়যন্ত্র এবার প্রকাশ্যে, পৌরভোটের মুখে ভাইরাল হওয়া এই অডিও ক্লিপ এর যদিও সত্যতা যাচাই করেনি ওপিনিয়ন টাইমস। অডিও ক্লিপে শোনা গেছে, নন্দীগ্রামে মমতাকে তাঁর নিজের দল সাহায্য না করায় তিনি বিধায়ক হতে পারেননি, তবে কি এটাই সত্যি যে অধিকারী পরিবারের গড়ে শুভেন্দু অধিকারীর কথাতে মমতাতে আস্থা রাখেনি তাঁর দল। কেন মমতাকে আস্থা নেই ? মমতা ব্যানার্জীর ভোটে হেরে যাওয়া নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে অনেকেই চুল চেড়া বিশ্লেষণ করেছে অথচ বাংলা তথা ভারতবর্ষের রাজনীতিবিদদের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুখ মমতা ব্যানার্জী। তবে কি সত্যিই মমতাতে আস্থা নেই তাঁর নিজের দলের কর্মীদের ? কিন্তু পাল্টা প্রশ্ন উঠছে তবে রাজ্যের বিপুল জয় কি ভাবে ?
নন্দীগ্রামে ভোটগণনার কারচুপি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইতি মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেছে শাসক দল। যদিও এই বিষয় নিয়ে স্পষ্ট মতামত জানানো হয়নি হাইকোর্ট এর বিচারপতিদের তরফ থেকে। এরই মধ্যে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয় এবং সেখানে একটি পুরুষ কণ্ঠকে বলতে শোনা যায় যে, কিছু কর্মীর অসহযোগিতার কারণেই নন্দীগ্রামে বিধায়ক হতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাংশের দাবি যে ওই পুরুষ কণ্ঠটি নাকি সর্ব পরিচিত মুখ বিধায়ক শ্রী সুব্রত বক্সির। এখনো পর্যন্ত এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভবানীপুর বিধানসভার ৭৩ নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাঁড় করানো হয়েছে মমতা ব্যানার্জীর ভ্রাতৃবধূ শ্রীমতি কাজরী ব্যানার্জীকে। রবিবার রাতে তাঁরই সমর্থনে আয়োজন করা একটি সভাতে এমনি বক্তব্য করতে শোনা গেছে ওখানে উপস্থিত থাকা তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে থাকা মমতা ব্যানার্জীর প্রিয় পাত্র রাজ্য সভাপতি শ্রী সুব্রত বক্সিকে। ওনাকে বলতে শোনা গেছে যে, ‘‘আমাদের দলের কিছু সহকর্মীর অসহযোগিতার কারণেই মমতা নন্দীগ্রামের প্রতিনিধি হতে পারলেন না। কিন্তু আমরা গর্বিত যে, তিনি ভবানীপুরের মাটি থেকে জিতেই তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেছেন যে, ভবানীপুরের ৮টি ওয়ার্ডের সবকটি ওয়ার্ডে জয় নিশ্চিত করতে হবে।, এমনটাই দাবি ওখানে উপস্থিত থাকে একাংশের।
গত ১৮ই জানুয়ারী সুব্রত বক্সিকে পাশে তৃণমূল সুপ্রিমো জানান যে, তিনি নিজেই নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। তারই কিছুদিন পর শোনা যায় যে, বিপরীতে প্রার্থী হচ্ছেন বিজেপিতে যোগদান করা একসময় মমতা ব্যানার্জীর ছায়াসঙ্গী শ্রী শুভেন্দু অধিকারী। গত ২রা মে ভোটের ফলাফল বেরোনোর পরই দেখা যায় যে গোটা রাজ্যে ভালো ফল করা তৃণমূলের সুপ্রিমো ১৯৫৬ ভোটে পরাজিত হয়েছে শুভেন্দুর কাছে। তারই মধ্যে ১৭ই জুন তৃণমূলের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে অভিযোগ করা হয় ভোটের ফলাফলের কারচুপির জন্য। পরে মমতা ব্যানার্জী ৩০শে নভেম্বরের উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে আসেন ।
তবে মামলা চলাকালীন মমতা ব্যানার্জী নিজে কোনোদিন তাঁর কর্মীদের বিরুদ্ধে। ভোটের ফলাফলের প্রকাশের পর তিনি বলেন যে, ‘‘আমরা দু’শোর বেশি আসনে জিতেছি। একটা আসনে হারা জেতা বড় ব্যাপার নয়। ওরা এক বার ঘোষণা করে দিয়েছিল যে আমি জিতে গিয়েছি। এখন বলছে হেরে গিয়েছি। এটা কী করে হয় জানি না। ওখানকার মানুষ যে রায় দিয়েছেন তা মেনে নিচ্ছি। ওখানে ভোটগণনা যাতে রিভিউ করা হয়, সেই দাবি জানাব। দরকার হলে আদালতে যাব।’’ তাঁরই কিছুদিন পর তিনি আবারো বলেন যে, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে রিটার্নিং অফিসারকে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তা হলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে।’’ পরবর্তী সময় ইভিএম পাল্টানোর অভিযোগ করে তিনি বলেন যে, ‘‘এক জনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’’