
পৃথা কাঞ্জিলাল : আবারও বেহালা পর্ণশ্রীতে (Parnashree) জোড়া মৃত্যুর সংবাদ। মা ও ছেলের রহস্যমৃত্যু ঘিরে তৈরী হয়েছে জল্পনা, ইতিমধ্যে নেমেছে পুলিশ। বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে মা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ। সূত্রের খবর, মহিলা প্রাক্তন নৌ-সেনা আধিকারিকের স্ত্রী। ঘরের ভিতরে একই হুক থেকে ঝুলিন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে ওই মহিলা এবং তাঁর ১২ বছরের ছেলের দেহ। স্ত্রী এবং ছেলের এমন মর্মান্তিক দৃশ্য প্রথমে দেখতে পান প্রাক্তন নৌ-সেনা আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমার (Birendra Kumar)।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ অনুমান করেন আত্মঘাতী (Suicide)হয়েছেন মা ও ছেলে। কিন্তু কেন এমন মারাত্মক সিদ্ধান্ত তাঁরা নিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জন্য যাচ্ছে মৃতার নাম রূপা কুমার (Rupa Kumar)এবং তাঁর ছেলের নাম শান (Shan)। পুলিশ জানিয়েছে, সুইসাইড নোট পাওয়া না গেলেও একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশের দাবি, সেখানে দেখা গিয়েছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সেভাবে বনিবনা ছিল না। একে অন্যকে বিশ্বাসও করতেন না।
তবে পুলিশ প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পেরেছে যে মা ও ছেলে একে অন্যকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারতেন না। পারিবারিক কোনও গন্ডগোল বা অশান্তির জেরে মা ও ছেলে এমন সাংঘাতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিশদে তথ্য জানতে রূপার মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, পর্ণশ্রী পল্লির একটি আবাসনে ভাড়া থাকতেন প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমারের পরিবার। বর্তমানে জিপিওতে পোস্টাল ম্যানেজারের পদে রয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার অফিস থেকে ফেরার পর বীরেন্দ্র দেখেন, তাঁর স্ত্রী দরজা খুলছেন না। বারবার ডেকেও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। এদিকে দরজা ধাক্কানোর আওয়াজে বেরিয়ে আসেন বাকি প্রতিবেশীরাও। দীর্ঘক্ষণ দরজা না খোলায় দরজা ভাঙা হয়। শোয়ার ঘরের দরজা ভাঙতেই উদ্ধার হয় মা ও ছেলের দেহ। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে মা ও ছেলে একসঙ্গেই আত্মঘাতী হয়েছেন।
এদিকে বীরেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, স্ত্রী কেন ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী হলেন, তা বুঝতেই পারছেন না। তাঁর দাবি, তাঁদের মধ্যে কোনও ঝগড়াঝাঁটি হয়নি। ঘটনার দিন ও সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। যদিও প্রতিবেশীদের অনেকে জানিয়েছেন, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হযয়েছিল। এর আগেও দম্পতির মধ্যে বচসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা, বহুবার চিত্কার-চেঁচামেচি কানে এসেছে তাঁদের। যদিও অশান্তির কারণ জানা যায়নিরূপা ও শানকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে আসেন রূপার এক দূর সম্পর্কের দাদা। খবর পাঠানো হয়েছে রূপার বিহারের বাড়িতেও। তদন্তকারী দের মতে, রূপার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পরেই রহস্যের কিনারা হতে পারে।