প্রেমের পথে একমাত্র বাঁধা তার স্বামী, পথের কাঁটা স-মূলে উপরে ফেললেন স্ত্রী
প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে মদ খাইয়ে খুন করলেন স্ত্রী

পল্লবী কুন্ডু : ফের পরকীয়ার জেরে স্ত্রী কুপিয়ে খুন করলেন স্বামীকে।উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার(Gaighata police station) গোয়ালবাথান গ্রামের ঘটনা। প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে মদ খাইয়ে খুন(Murder) করলেন স্ত্রী। এখানেই শেষ নয়, খুন করার পর সেই দেহ প্রেমিকের-ই ঘরে খাটের নিচে পুঁতে দেওয়া হলো। তবে এত কিছু করেও চাপা থাকলোনা সত্য। ঘটনার সন্ধান পেয়েই ঘটনা স্থলে গিয়ে সেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং গ্রেফতার করা হয় ওই মহিলা ও তার প্রেমিক কে।
জানা যাচ্ছে, কোচবিহারের বানেশ্বর কুটিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা হলেন ৪০ বছর বয়সী রামকৃষ্ণ সরকার। পেশায় তিনি একজন শ্রমিক। বছর কয়েক আগে স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে বনগাঁর বাবুপাড়া এলাকায় এসে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। তাঁদের ৭ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। অন্যদিকে, মাস কয়েক আগে মোবাইল ফোনে স্বপ্নার সঙ্গে যোগাযোগ হয় গাইঘাটার গোয়ালবাথান গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে সুজিত দাসের। আর তারপরেই প্রথমে বাক্যালাপ এবং যথারীতি একটি প্রেমের সম্পর্ক।
আর তাদের এই প্রেমের পথে একমাত্র বাঁধা ছিল তার স্বামী রামকৃষ্ণ। আর তাই পথের কাঁটা সরাতে শেষমেশ প্রেমিকের সাথে হাত মিলিয়ে খুন করার পরিকল্পনা করে স্বপ্না। আর সেই পরিকল্পনা মাফিক-ই দশমীর রাতে ঠাকুর দেখার নাম করে স্বামীকে গোয়ালবাথান গ্রামে নিয়ে যায় স্বপ্না। সুজিতের সঙ্গে আগে আলাপ থাকায় সুজিতের আমন্ত্রণে এলাকার একটি পুকুর ধারে মদের আসরে বসে। উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ। সেখানে প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে দেয় স্বপ্না। তারপর স্বপ্নার সামনেই তার নির্দেশ মতো সুজিত প্রথমে রামকৃষ্ণের মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। কোদাল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপ দিয়ে খুন করে সুজিত এবং স্বপ্না। দু’জনে মিলে মৃতদেহ টানতে টানতে সুজিতের বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে সুজিতের ঘরের খাটের নীচে গর্ত করে রামকৃষ্ণের দেহ পুঁতে দেওয়া হয়।
তবে সত্য কখনো চাপা থাকেনা। এক্ষেত্রেও প্রকাশ্যে আসলো সকল ঘটনা।পরের দিন দুপুরে গোয়ালবাথান গ্রামের ওই পুকুরধারে রক্তের দাগ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় গাইঘাটা থানায়। পুলিশ তদন্তে নেমে বাঁশবাগান থেকে মাস্ক, টর্চ লাইট উদ্ধার করে। পরের দিন বুধবার সকালে পুলিশের নজরে আসে সুজিতের বাড়ির সামনে রক্তের দাগ। পুলিশ সুজিতের ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। সেখানে সুজিতের খাটের নীচে মাটি খোঁড়া দেখে সন্দেহ আরও শক্ত জমাট বাঁধে। এরপর সেখানকার মাটি সরাতেই একটি মৃতদেহ বেরিয়ে আসে। জানা যায়, দেহটি রামকৃষ্ণ সরকারের। এরপরই পুলিশের জেরায় সকল তথ্য সামনে আসে এবং পুলিশের কাছে সকল রহস্য ভেদ হয়। গ্রেফতার হয় স্বপ্না ও তার প্রেমিক।