রবিবারে সারা রাতের চেষ্টাতে বনদপ্তর সক্ষম হাতি যুগলকে জঙ্গলে পাঠাতে
রাত বারোটা নাগাদ হাতি দুটিকে ৩১ নং জাতীয় সড়ক পার করিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বৈকন্ঠপুর জঙ্গলে

তিয়াসা মিত্র : গত পরশু অর্থাৎ শনিবার রাত দুটো নাগাদ বৈকন্ঠপুর পুর জঙ্গল থেকে দুটি বুনো হাতি জলপাইগুড়ি শহরে ঢুকে গিয়েছিল। এর পর তারা জলপাইগুড়ির ‘ভ্রমণ’ সেরে আশ্রয় নেয় জলপাইগুড়ি পুর এলাকার ২১ নং ওয়ার্ডে থাকা কবর স্থানে। এই খবরে ছুটে আসেন বনদপ্তরের বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মী , আসেন পুলিশ প্রশাসন-এর উচ্চপদস্থ অফিসাররা , এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের টিম, পুলিশ ফোর্স মোটামুটি সব রকম পরিকল্পনা নিয়ে নেওয়া হয়ে এই মিশনে।
দিনভর ঘটনাস্থলে দাড়িয়ে থেকে হাতির গতিবিধির উপর লক্ষ রাখতে থাকেন জলপাইগুড়ি বনবিভাগের ডিএফও মৃদুল কুমার। বেলা বাড়ার সাথে সাথে হাতি ঢোকার খবর চাউর হয়ে পরে জলপাইগুড়ির নানান স্থানে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে সন্ধে নামার সাথে সাথে শুরু হবে এলিফ্যান্ট ড্রাইভিং। তাই চলতে থাকলো হাতি দুটির গতি বিধির ওপর নজর দেওয়া।
হাতি দুটিকে ড্রাইভ করে করলা নদী পার করিয়ে জাতীয় সড়কে তুলতে। এরপর জাতীয় সড়ক পার করে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে জঙ্গলে। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে তাদের কাবু করে ক্রেনের সাহায্যে লরিতে তুলে পাঠানো হবে জঙ্গলে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিয়ে নেয় বনদপ্তর। বিকেল ৫ টা নাগাদ শুরু হয় হুটার বাজিয়ে, বাজি ফাটিয়ে হাতি ড্রাইভিং এর কাজ। হাতি দুটি তাড়া খেয়ে নদীতে নামে। কিন্তু আবার অন্যদিক থেকে তাড়া খেয়ে ফের আশ্রয় নেয় কবরস্থানে। এরপর আবার তাড়া দিলে নদী পেরিয়ে চলে যায় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের দিকে। সেই অনুযায়ী জাতীয় সড়ক থেকে মাইকিং এর সাহায্যে সরানো হয়ে লোকের জমায়েত সাথে বন্ধ করা হয়ে দোকান এবং গাড়ি চলাচল। এই ভাবেই দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং চালাবার পর প্রায় রাত বারোটা নাগাদ হাতি দুটিকে ৩১ নং জাতীয় সড়ক পার করিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বৈকন্ঠপুর জঙ্গলে।