‘Ma I quit’ কিশোরের বিদায়ে মায়ের চোখের জলে,মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী কিশোর
এক মাত্র ছেলেকে হারিয়ে সর্বহারা মা বাবা

তিয়াসা মিত্র : ” মা আসার সময়ে সিঙ্গারা নিয়ে এসো ” এই ছিল কিশোরের শেষ কথাটার মায়ের সাথে। সেবক রোডে বাড়ি সেই কিশোরের, নাম সোমনাথ সাহা এবং ১২ ক্লাস-এর পড়ুয়া ছিল এই যুবক, পড়াশোনার চাপে আত্মঘাতী হয় সোমনাথ। পড়াশোনাতে ভালো ছিল বলেও জানা যাচ্ছে। তার মাও একজন শিক্ষিকা। । শিলিগুড়ির একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র ২৫ জানুয়ারি দুপুরে সাদা বোর্ডে অঙ্কও করেছে। পরে সেই বোর্ডে সময় লিখে ‘মা আই কুইট’ লিখে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে পরিবার। হতবাক পরিবার থেকে শুরু করে বন্ধু সকলে। পরিবার এবং পরিচিতদের থেকে জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়তে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। বন্ধুদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে আর টিউশনে যাবে না, বাড়িতে নিজেই পড়বে বলে জানিয়েছিল। তাই বলে সে আত্মহত্যা করবে, তা ভাবতে পারেনি কেউ।
মা ঘটনার পর থেকেই ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন। খাচ্ছেন না কিছু। তাঁকে একাধিক বার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়েছে পরিবারের লোকদের। তিনিও শিক্ষিকা। ওই দিন কাজে যাওয়ার সময় ছেলে তাঁকে বলেছিল, ‘সাবধানে যেও মা। ফেরার সময়ে শিঙাড়া নিয়ে এসো।’ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার সময় যখন শিঙাড়া নিয়ে মা বাড়ি ফেরেন, তখন সব শেষ। মেডিকেল মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নির্মল বেরার বলেন, ‘‘মানসিক অবসাদের জেরেই এই ঘটনা। কখনও পরিবারের চাপ এবং মানসিক অবসাদে এই ধরনের ঘটনা হয়। জানতে পেরেছি, ওই ছাত্র পড়াশোনায় ভাল। লকডাউনে স্কুল বন্ধ। বিভিন্ন কারণে মানসিক আবসাদে ভুগছিল। টিউশন বন্ধ করে দেয়। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল।’’
এই বিষয়ে যে খুবই স্পর্শকাতর তা বলাই বাহুল্য কিন্তু, মনোবিদ বিশেষজ্ঞরা এবং শিক্ষকেরা বলছেন, স্কুল না খোলাতে এই মানসিক চাপ আরো জোরালো হয়ে পড়ছে, তাই অভিভাবকদের দরকার তার সন্তানদের সাথে কথা বলা এবং তাদের সাথে বন্ধুর সাথে মেশা যাতে তাদের ভিতর কি চলছে সহজে বোঝা। এই স্কুল বন্ধ থাকা অবস্থাতে তা খুবই প্রযোজন।