পুণের ৬০ বছর বয়সী ভিট্টাল মাপারে পেশায় রিকশাচালক, পরিচয় দিলেন সততা এবং মানবিকতা বোধের
বাড়িতে অভাব কোনো মতে সংসার চলে কিন্তু সোনা ও নগদ মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন এই ব্যক্তি।

পল্লবী কুন্ডু : দুবেলা খাবার জোগাড় করতে কাল ঘাম ছোটে। কিন্তু কখনোই অসৎ পথ অনুসরণ করার কথা ভাবেননি তিনি।পেটে খিদে আর এমনই পরিস্থিতি যে হয়তো চাল কিনে নিয়ে গেলে তবেই ভাতের হাড়ি চড়বে।কিন্তু তার সততার পথে সর্বদা অটল তিনি।এই মানুষটির নাম ভিট্টাল মাপারে তিনি হলেন পেশায় একজন রোকশাচালক। সামাজিক ভাবে তিনি গরিব হলেও মানসিক দিক থেকে আজকের দিনে এমন ধোনি ব্যক্তি ১০০ তে ১ টা মেলে কিনা সন্দেহ। পুণের ৬০ বছর বয়সী রিকশাচালক।পরিচয় দিলেন তার সততা এবং মানবিকতা বোধের। তার এই কাজ সমাজ মাধ্যমে আসতেই মুহূর্তের মধ্যে পৌঁছে গেলো সকলের কাছে।
আপনাদের নিশ্চই মনে হচ্ছে তো যে এই ব্যক্তি কি এমন কাজ করেছেন যার জন্য এত প্রশংসা ! তাহলে শুনুন – ঘটনাটি ঘটেছে পুণেতে।সোনা ও নগদ মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন তিনি।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার এক দম্পতি কেশব নগর এলাকা থেকে ভিট্টাল মাপারের রিকশাতে ওঠেন এবং হাদপসর বাস-স্ট্যান্ডে তাঁরা নেমে যান। ভুলবশত ব্যাগটি রিকশাতে ফেলে চলে যান। এই গোটা বিষয় নিয়ে ভিট্টাল মাপারে বলেন, ”আমি যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে রিকশা নিয়ে কিছুটা এগিয়ে যাই। বিটি কাওয়াদে রাস্তায় যাই , সেখানে আমি আমার গাড়িটি চা খাওয়ার জন্য পার্ক করি।তখনই আমি লক্ষ্য করলাম এই ব্যাগটি পিছনের সিটে পড়ে আছে। আমি এটি না খুলে কাছাকাছি থাকা ঘোড়পাড়ি চৌকিতে গিয়ে ইনস্পেক্টর বিজয় কদমের কাছে তা জমা দিয়ে আসি।”
সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে সাব ইন্সপেক্টর কদম পিটিআই-কে জানান , “আমরা আমাদের নিয়ম মেনে ব্যাগটি খুলি , খোলার সময় আমরা ১১ তোলা ওজনের সোনার গয়না , ২০ হাজার টাকা নগদ, সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ ডলার এবং কিছু পোশাক পেয়েছি। আমরা হাদপসার থানায় যোগাযোগ করেছি ওখানেই তারা আছেন যাদের ব্যাগটি হারিয়েছিল। হাদপসার পুলিশ আমাদের জানায় মাহবুব এবং শানাজ শাইখ ইতিমধ্যে তাদের নিখোঁজ ব্যাগের অভিযোগ থানায় এসেছেন। সেখানে আমরা ব্যাগটি পাঠিয়ে দি। মুন্ধওয়া থানায় ব্যাগটি দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ কমিশনার সুহাস বাউছে পেশায় রিকশাচালক ভিট্টাল মাপারে-কে অভিনন্দন জানান তাঁর এই কাজের জন্য।”
পেশায় তিনি রিকশাচালক বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও একটি ছেলে রয়েছে। ছেলে একটি ছোট বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে। কোনওরকমে তাঁদের সংসার চলে। তিনি আরও জানান যে এই কাজের জন্য তিনি অনেকের কাছ থেকেই প্রশংসা পাচ্ছেন,যা তাঁর খুব ভাল লাগছে। তিনি এও বলেন এটাই আমার জীবনে পাওয়া সেরা পুরস্কার। এই ঘটনা আবারো প্রমান করে দিলো যে শুধু মাত্র ধোনি হলেই অসাধারণ হওয়া যায়না। সাধারণ থেকে অসাধারণ হতে গেলে সততাই যথেষ্ট।