“আফগানিস্তানের বাস্তবের পাশবিকতা ” নিজের মেয়েদের,নিজের কিডনি বিক্রি করে ক্ষণস্থায়ী খাদ্য জোগাড়
দেড় লক্ষ আফগানিতে নিজের ডান কিডনিও বিক্রি করেছেন রহমতি

তিয়াসা মিত্র : কোনো মতে মাথা জোগাড় ঠাই থাকলেও নেই ১০ জনের সংসারে খাদ্যবাবস্থার জোগাড়। তাই নিজের মেয়েদের বিক্রি করেছে আফগানি মা দেলরম রহমতি। সেখান থেকে কিছুটা সংসার চালানোর ব্যবস্থা হলেও তও কুলাইনি সেই হতবাগা সংসারে, যার ফলে নিজের একটি কিডনি বেঁচে দিতে রহমতিকে। অসুস্থ দুই ছেলে এবং তার স্বামীর ওষুধের জোগারেই ওষ্ঠাগত প্রাণ। রহমতির নিজের ক্ষতস্থান এখন শুকিয়ে ওঠেনি। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর একটি প্রতিবেদনে বলছে, প্রায় চার বছর আগে আফগানিস্তানের বদগিস প্রদেশের ভিটেমাটি ছেড়েছিলেন দেলরম রহমতি। উঠে এসেছেন হেরাটের বস্তিতে। তবে আট ছেলেমেয়ের মুখে খাবার জোটাতে দিশেহারা অবস্থা রহমতিদের।
খিদের জ্বালায় মাস কয়েক আগে নিজের মেয়েদের বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। রহমতির কথায়, “অচেনা লোকেদের হাতে মেয়েদের বেচে দিয়েছি। এক জন আট আর অন্যটার বয়স ছয়।” প্রাপ্তবয়স্ক হলে রহমতির সে মেয়েদের তুলে দিতে হবে ক্রেতাদের হাতে। এক লক্ষ আফগান মুদ্রায় (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ৭০ হাজার টাকা) এক একটি মেয়েকে বিক্রি করে হাতে কিছুটা অর্থ এসেছে বটে। তবে তাতে রহমতির সংসারে সাশ্রয় হয়নি। দুই ছেলের চিকিৎসায় সে অর্থও হু হু করে শেষ! রহমতির এক ছেলে ভুগছে মানসিক অসুস্থতায়। অন্য জন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। স্বামীর জন্য নিয়মিত ওষুধও কিনতে হয়। উপায় না পেয়ে দু’মাস আগে দেড় লক্ষ আফগানিতে নিজের ডান কিডনিও বিক্রি করেছেন রহমতি। ভারতীয় মুদ্রাতে যা ১ মুখর থেকে একটু বেশি হবে।
২০২১ সালে তালিবানি সরকার ঘাঁটি গাড়ার পর থেকে এই চিত্র বহু জায়গাতে লক্ষণীয়। এতে নতুন করে কিছু হওয়ার নেই। তবে এটাও ঠিক এই শাসক দল আসার পর থেকে আফগানিস্তানের অবস্থা পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে খারাপ অবস্থাতে রয়েছে। শুধু আর্থিক ভাবে নয় মানসিক, শারীরিক, নারী প্রতি বিধি নিষেধের লম্বা গন্ডি সব মিলিয়ে মিশিয়ে জর্জরিত আফগানী ভাগ।