Uncategorized

সরকার কী রেশন দিয়ে মানুষকে ভিখারি বানিয়ে রাখতে চায়, প্রশ্ন জন সাধারনের !

যে সরকার ৯ বছর বিনামূল্যে ফ্রিতে কিছু দেয়নি, এখন রেশন দেবে : বিস্ফোরক সূর্যকান্ত

দেবশ্রী কয়াল : সারাজীবন নাকি ফ্রিতে রেশন দেবে এই রাজ্য সরকার। যদি ২০২১ এর ভোটে আরও একবার ক্ষমতায় আসেন তাঁরা। হ্যাঁ এমনটাই গতকাল শহীদ স্মরণের ভার্চুয়াল সভাতে বলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি এদিন সভাতে, জন সাধারনের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষকে কোনো চিন্তা করতে হবে না যতদিন আমি আছি। আর আমরা যদি আগামী ২১শের নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরে আসি তাহলে কোনো মানুষকেই কিন্তু কখনও অনাহারে কাটাতে হবে না। আমরা কেবল আম্ফান বা লকডাউনে বিনামূল্যে রেশন দেব না, সারা জীবনের জন্যই আমরা ফ্রিতে মানুষকে রেশন সামগ্রী দেব।

গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তার পরেই চারিদিকে শুরু হয়েছে সমালোচনা, রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই নিয়েছে তাতে অংশ। জানাচ্ছে নিজেদের প্রতিক্রিয়া। এদিন সকালে চায়ের চুমুকে সাধারণ মানুষের বক্তব্য জানতে আমরা সরাসরি পৌঁছে যাই, সাধারণ মানুষের কাছে।

এদিন বেহালার এক ফুল বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ” হটাৎ হটাৎ করে লকডাউন করছে সরকার, যে এলাকায় লকডাউন নেই সেখানে এসেও পুলিশরা দোকান বন্ধ করার কথা বলছে। দোকান খুলে রাখলে তুলে দেওয়ার জন্য জোর দিচ্ছে। আমাদের সম্বল তো এই টকু। খাবো কী এইভাবে হলে ? আর আমরা বিনামূল্যে রেশন চাই না, চাই চাকরি। আমার ছেলে চাকরি খুঁজছে, কিন্তু সেটাই নেই এই রাজ্যে। সরকার কী সারাজীবন মানুষকে এইভাবে রেশন দিয়ে ভিখারি বানিয়ে রাখতে চায় ?

এরপর যখন কালীঘাট নিবাসী এক অফিস কর্মীর সাথে কথা বলি, তিনি বলেন, ” লকডাউনে তো চাকরিটা গেছে ! অন্য চাকরির সন্ধানে আছি। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন চাকরি আছে। কোথায় আছে ? উনি বিনা পয়সায় রেশন দেওয়ার কথা বলছেন, কিন্তু কই চাকরি দেওয়ার কথা বলছেন না তো। আমরা কেউই কিন্তু ফ্রিতে চাই না রেশন। আমরা রোজগার চাই, চাকরি চাই। সারাজীবন তো আর চপ শিল্প করে কাটানো যায় না, সেটা ওনাকে বুঝতে হবে। এত পড়াশোনা করে, আমরা চাকরি করতে চাই, ফ্রিতে রেশন পেতে চাই না। তাই মাননীয়া এই সব বন্ধ করে, রাজ্যের মানুষদের চাকরি দিক। আর হ্যাঁ বেকারত্ব কমেনি, বেড়েছে রাজ্যে। ”

কালিকাপুর এর এক রিক্সাওয়ালা কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ” মমতা দিদি রেশন দেবেন বিনামূল্যে খুব ভালো কথা, হয়ত এর জেরে দুবেলা খাবার টুকু জুটে যাবে। কিন্তু আদেও কী তা হবে ? এর আগেও তো অনেক কিছু বলেছিলেন তিনি, হয়নি। এই খারাপ সময়ে কিন্তু পরিবার ঠিক করে রেশন পায়নি। যাঁরা এখন রেশন পাচ্ছে না, তাঁরা বাকি জীবন রেশন বিনা মূল্যে পাবেন সেটা ভাবতে একটু সমস্যা হচ্ছে। আচ্ছা সত্যি দেবেন তো ? আবার চুরি হবে না তো ? আমাদের মতো গরিবদের ঘরে খারাপ রেশন আসবে না তো ? এখন তো শুনছি কতমানুষের নাকি চাকরি নেই, তাহলে তাদের পকেটে টাকা না ঢুকলে, আমাদের রোজগারই বা হবে কী করে ? শুধু কী ফ্রী এর রেশনে আমাদের ৬ জনের লোকের সংসার চলে যাবে ? যদি সেই ব্যবস্থা সরকার করতে পারে, তাহলে তো খুব ভালোই। নাহলে আবার কি, যেমন অবস্থায় ছিলাম তার থেকে আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছাবো ,আর যে সরকারই আসুক না কেন, সবাইতো নিজের আখেরটা গোছাতে চায়, গরিবদের কথা কেউ ভাবে না !”

এতো গেল সাধারণ মানুষের বক্তব্য। রাজনৈতিক মহলেও কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য নিয়ে চলছে কড়া সমালোচনা। বিরোধী দলরা তা দেখছেন তির্যক নজরে। এই বিষয়ে অনেক রাজনৈতিক নেতারাই জানান তাঁদের মন্তব্য।

এই বিষয়ে গতকাল, সিপিআইএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ট্যুইট করে বলেন, ” থাকলে তো ? তৃণমূল সরকার নয় নয় করে নয় বছর ক্ষমতায় রয়েছে। একজনও বিনামূল্যে রেশন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পায়নি। এখন অনুগ্রহ করে নয় মাস আপনি মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কি না সেটা দেখলে ভালো হয়।”

এরপর এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ৯ বছর ধরে যারা ক্ষমতায় রয়েছে, তাঁরা এই ৯ বছরে কিছু করতে পারলো না, তারা আবার নাকি সারাজীবন ফ্রিতে রেশন দেবে। আর তাও আবার নাকি তারা ক্ষমতায় এলে। ক্ষমতায় থাকলে তো কিছু করবে, ওরা আর ক্ষমতায় আসবে না

Show More

OpinionTimes

Bangla news online portal.

Related Articles

Back to top button

Discover more from Opinion Times - Bengali News

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading