অপ্রতিরোধ্য ‘ঝাঁসির লক্ষ্মী’ শৈলী সিংহ

বিশ্ব জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে রুপো জয় বছর ১৭ এর শৈলীর

ইন্দ্রানী চক্রবর্ত্তীঃ অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে গোটা দেশকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ঝাঁসির শৈলী। ছোটবেলা থেকেই  দারিদ্রতার  সাথে  লড়াই করেছে সে। বোন  ভাই ও মা-কে নিয়ে ছিল তার ছোট সংসার। পিতৃহীন শৈলীর স্বপ্নের পথে অন্তরায় হয় অর্থ। জুতো কেনার টাকা না থাকায় ধুলোই হয়ে উঠেছিল তার দৌড়ানোর সঙ্গী। খালি পায়েই চলত তার প্র্যাকটিস।

দৌড়াতে ভালোবাসতো ছোট্ট শৈলী । একদিন খবরের কাগজে  নির্বাচন চলছে জানতে পেরে তাতে অংশগ্রহণ করতে বলে তার মা । প্রথমে ঝাঁসিতে এবং পরে লখনউয়ের কেডি সিংহ স্টেডিয়ামে ট্রায়াল  দেয় সে।   প্রথম জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা এ অনূর্ধ্ব-১৪ লং জাম্পে পঞ্চম হয়েছিল সে।প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য ফল না করলে ও শৈলী সেদিন পেয়েছিল জীবনের সবচেয়ে বড়ো সুযোগ। সেদিনের প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন   রবার্ট ববি জর্জ , ব্রোঞ্জজয়ী অঞ্জু ববি জর্জের স্বামী। পদক অর্জন করতে না পারলেও শৈলীর জেদ ও আগ্রহ দেখে  তাকে নিজের ছাত্রী রূপে বেছে নেন রবার্ট ।অঞ্জু  বলছেন, “সে বার ও পদক জেতেনি। এত ছোটখাটো চেহারা ছিল যে আমরা দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম ও ঠিক করে খাবার পায় না। টেকনিকও ঠিক ছিল না। কিন্তু জেদ ছিল, সাফল্যের জন্য শরীরে যে স্ফুলিঙ্গ দরকার, সেটা ছিল। কোচেরা সেটাই খোঁজেন।” বাংলার কোনির জেদ দেখে যেরকম ভাবে তাকে বেছে নিয়েছিলেন ক্ষিতীশ , তেমনভাবেই রবার্ট পথ দেখায় ঝাঁসির শৈলীকে ।

অর্থ কষ্ট পিছু না ছাড়লেও মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্য মা টাকাপয়সা জোগাড় করে ব্যাঙ্গালুরুতে পাঠায় তাকে । সেখানে ও রবার্টের কাছে জোরকদমে অনুশীলন চলে তার। সঠিক খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত  দেহচর্চা সবকিছুর উপর নজর রেখেছিলেন কোচ।অনেক পরিশ্রম করে ও ঘাম ঝরিয়ে নিজেকে একটু একটু করে তৈরি করে শৈলী; সাথে ছিল অদম্য জেদ ।  তার ফলই পেল সে , রূপো জয় করে ভারতকে তুলে ধরলো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। তার জন্য গর্বিত আজ সারা দেশ। ভবিষ্যতে আরও শীর্ষে নিজেকে দেখতে পায় ১৭ বছরের শৈলী।

Exit mobile version