ধর্মঘট মোকাবিলায় তৈরী নবান্ন, থাকছে পুলিশও
আগামীকালের ধর্মঘটের মোকাবিলায় মজুত থাকছে সবরকম ব্যবস্থা, তৈরী পুলিশ বাহিনী ও

পৃথা কাঞ্জিলাল : আগামিকাল দেশজুড়ে পালন হতে চলেছে সাধারন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাম (Left Party) ও কংগ্রেস সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনগুলি। তবে তৃণমূল (Tmcp)এই ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না। দলের তরফে জানান দেওয়া হচ্ছে যে বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে ধর্মঘটের (Strike)ডাক দেওয়া হয়েছে সেগুলি অবশ্যই সমর্থন করার মতন কিন্তু কোভিডের প্রকোপে ও কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্য দেশের অর্থনীতি প্রচন্ড সঙ্কটজনক। এই অবস্থায় ধর্মঘট ডাকা মানে আরও বেশি করে অর্থনীতির শিরদাঁড়ায় আঘাত করে। তাই তৃণমূল তাদের সরিয়ে নিয়েছে এই ধর্মঘট থেকে। আর এই কারনেই আগামিকাল রাজ্য সরকারের সঙ্গে একটি বিরোধের সম্ভাবনা ফুটে উঠছে। তবে রাজ্য সরকারও এই ধর্মঘট ঠেকাতে এখন থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়তে চাইছে।
মঙ্গলবার বিকালে নবান্নে (Nabanna) রাজ্যের পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা বেসরকারি বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে বাস মালিকদের বৃহস্পতিবার রাস্তায় বাস নামানোর অনুমতি। কিন্তু সেই বৈঠকে সেই প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি বাস মালিকেরা। পরে রাতের দিকে রাজ্য সরকারের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ধর্মঘটের দিন রাস্তায় বাস নামিয়ে যদি কোনও কারনে বাস ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে রাজ্য সরকার তার ক্ষতিপূরণ দেবে।
এই আশ্বাসে বেসরকারি বাস মালিকেরা আগামিকাল রাস্তায় বাস নামাতে রাজি হয়েছেন। তাই কলকাতা হোক কী জেলা আগামিকাল রাস্তায় সরকারি বাস বেশি সংখ্যায় পাওয়া যাবে পাশাপাশি বেসরকারি বাসও পাওয়া যাবে। আগামিকাল আমজনতা প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বেরিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য এই সিদ্ধান্ত। রাস্তায় থাকবে অটো, ট্যাক্সি, ক্যাবও। তবে বামপন্থী ট্যাক্সি এবং বাস সংগঠন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা গাড়ি রাস্তায় নামাবে না। পথে নেমে যানবাহন না পেয়ে কারও সমস্যা হলে রাজ্য পরিবহণ দফতরের কন্ট্রোলরুমের টোল ফ্রি নম্বরে যোগাযোগ করে জানাতে পারবেন নিত্যযাত্রীরা। তার জন্য আগামিকাল ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে কন্ট্রোলরুম।
ধর্মঘটের দিন রাস্তায় বাস নামানোর প্রসঙ্গে এদিন ওয়েস্টবেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ণ বোস জানান, ‘বাসের চাবি থাকে শ্রমিকদের হাতে। তাঁরা কাজে যোগ দিলে গাড়ি রাস্তায় নামবে। না হলে নামবে না। কিন্তু বাস নামানোর পর যদি তাতে ভাঙচুর হয় তার বিমার বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে।যাত্রীরা কোনও সমস্যায় পড়লে টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করতে বলা হয়েছে। নম্বর দুটি হল ১৮০০৩৪৫৫১৯২, ৮৯০২০১৭১৯১।
বাসের পাশাপাশি নবান্ন চোখ রাখছে ধর্মঘটের সকালে অবরোধ ঠেকাতেও। তার জন্য পুলিশি বন্দোবস্ত কড়া রাখা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) মোট ৫ হাজার ফোর্স মোতায়েন থাকবে কাল শহরে। লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকেরা রাস্তায় নেমে গোটা বিষয়টি দেখভাল করবেন। সকাল থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টেড থাকবেন ডিসি পদমর্যাদার অফিসারা। সেই সঙ্গে রাস্তায় নজরদারি করার জন্য থাকবে ১০টি কুইক রেপন্স টিম। পিটিএস, মেয়ো রোড, হেস্টিংস, রানী রাসমণি, স্ট্র্যান্ড রোড, ধর্মতলা বাস ডিপো ও যাদবপুর এইটবি বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের ফোর্স থাকবে। এর পাশাপাশি জেটিঘাট, স্ট্র্যান্ড রোডেও আলাদা ব্যাবস্থা থাকবে যাতে যাত্রীদের কেউ বাধা না দিতে পারে। ধর্মতলা ও সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউতে ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল, রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ হতে পারে। সেই কথা মাথায় রেখে ওই দুই জায়গায় জলকামানও মজুত রাখা হচ্ছে।