‘টুম্পা’ বিতর্কে কড়া পদক্ষেপ: ২ বছরের জন্য ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ পাঁচ ছাত্র
এক সপ্তাহের মধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের

নিজস্ব সংবাদদাতা: সরস্বতী পুজোর দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘টুম্পা সোনা’ গানের তালে কিছু ছাত্র ছাত্রীর উদ্দাম নাচে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তদন্ত করার জন্য তৈরী করা হয়েছিল একটি কমিটি। সেই তদন্ত কমিটি সম্পূর্ণ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ৫ জন পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে। ঘটনাটিতে শিক্ষাঙ্গনের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন তো বটেই তার সঙ্গে করোনা কালে এভাবে জমায়েত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। এছাড়াও এমন চটুল গানে পড়ুয়াদের উদ্দাম নৃত্য কোন সংস্কৃতির নিদর্শন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আয়োজিত সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেল সাজানো হয়েছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগানে। সে নিয়েও বিতর্ক বাঁধে। এদিন শাস্তিস্বরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে পাঁচ জন পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে তাদের দু’বছরের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্যাম্পাসে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হল।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি ছাড়াই কয়েক জন ছাত্র ছাত্রী মিলে ক্যাম্পাসের মধ্যে কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সূত্র অনুযায়ী এই অনুষ্ঠানের মধ্যে এমন কিছু গান বা নাচ হয়েছে যা খুবই নিম্নমানের ও কুরুচিকর। যার জেরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নষ্ট হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, যে সময় করোনা আবহে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন বন্ধ, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে না, সেই সময় ক্যাম্পাসের মধ্যে এই ধরনের অনুষ্ঠান বরদাস্ত নয়। কমিটির করা তদন্তের রিপোর্টে বলা আছে, পাঁচজন পড়ুয়া এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই পাঁচ পড়ুয়া আগামী দু’বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে না। পরবর্তীকালে যাতে আর কেউ এই ধরনের ঘটনা না ঘটায় তাই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরস্বতী পুজোর দিন দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে দেখা যায় জেবিএল বক্সে তারস্বরে বাজছে ‘টুম্পা সোনা’। আর তাতে উদ্দাম নেচে চলেছে ছাত্রছাত্রীরা। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল হলে তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষাবিদ সহ অনেকে। শিক্ষাবিদ অমল সরকার বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা। কত সম্মান জড়িয়ে রয়েছে। আজকে আনন্দের নামে যা ঘটাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তা নিন্দার ভাষা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ভূলুন্ঠিত হল আজ।’ আজ সোমবার সেই বিতর্কিত ঘটনা নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে পদক্ষেপ নিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।