আরও একবার মাতৃশক্তির জয়, সন্তান প্রসবের দু ঘন্টা পরেও ১৫০ কিলোমিটার হেঁটে পাড়ি দেয় মা শকুন্তলা
পরিযায়ী শ্রমিকরা অসহায়, সকলের কপালে ট্রেন নেই, তাই হাঁটাই একমাত্র পথ
@ দেবশ্রী : উপায় না পেয়ে বেশিরভাগ পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটেই বাড়ি যাওয়ার জন্য নিজেদের যাত্রা শুরু করেছে। এমনই এক প্রসূতি হেঁটেই পাড়ি দিয়েছিলেন প্রায় হাজার কিলোমিটার পথ। তার পর পথেই দেয় সন্তানের জন্ম। তবু থেমে থাকা নয়, ঘণ্টা দু’য়েকের বিশ্রামের পরে সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে ফের শুরু করে হাঁটা। কারন বাড়ি তখনও যে আসতে বাকি।
পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেন চালু করেছে সরকার। তবে সেই শিকে যে সকলের ভাগ্যে ছিঁড়ছে তা কিন্তু মোটেও নয়। মহারাষ্ট্রের নাশিকে কাজ করতে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার উচেহারা গ্রামের বাসিন্দা রাকেশ কল ও শকুন্তলা কল। লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ওই দুই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজকর্ম। দম্পতি আটকে পড়েন নাশিকেই। এদিকে গর্ভাবস্থার শেষের দিক, তবু সেই অবস্থাতেই হেঁটে বাড়ি ফেরার ঝুঁকি নেন শকুন্তলারা। অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে দল বেঁধে হাঁটা শুরু করেন। সঙ্গে রাকেশ-শকুন্তলার তিন সন্তান।
মঙ্গলবার রাস্তায় শকুন্তলার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। নাশিক থেকে ধুলের মাঝে একটি গ্রামে থামেন ওই দম্পতি। রাকেশ জানিয়েছেন, এক শিখ দম্পতি জামাকাপড়, ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করেন তাঁদের। তবে তার পরেও থেমে থাকেননি শকুন্তলা। মাত্র ঘণ্টা দু’য়েক বিশ্রাম নিয়েই ফের হাঁটতে শুরু করেন। ওই সদ্যোজাতকে কোলে নিয়েই প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তাঁরা।
এই ঘটনার খবর পেয়ে সাতনা প্রশাসন বাসের ব্যবস্থা করে। বিজাসন চেকপোস্ট থেকে শকুন্তলাকে উদ্ধার করা হয়। সেই বাসে করেই শেষমেশ উচেহারা গ্রামে পৌঁছন রাকেশ-শকুন্তলা ও তাঁদের চার সন্তান। গ্রামে পৌঁছেই মা ও সদ্যোজাতকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিত্সকেরা জানান, দু’জনেই সুস্থ।