বর্ণ কে বাদ দিয়ে সুন্দর হওয়ার মন্ত্রেই দীক্ষিত হয়ে জেগে উঠলো হিন্দুস্থান ইউনিলিভার
ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি নাম থেকে বাদ গেলো 'ফেয়ার'
পল্লবী কুন্ডু : বহু বছর পর শেষমেশ সিদ্ধান্তে আসতে পারল সংস্থা। বর্ণ বৈষম্যের বিভেদ এবার ঘুচিয়ে শুধুমাত্র সুন্দর করে তোলার পথে নতুন নামের জয়যাত্রা শুরু করলো ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি‘ ব্র্যান্ড। ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি নাম থেকে বাদ গেলো ফেয়ার। বৃহস্পতিবার হিন্দুস্থান ইউনিলিভার ভারতের শাখার তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, আর তাতেই জানান হয়, ‘সৌন্দর্য্যকে আরও গভীরভাবে দেখার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের নাম থেকে ফেয়ার শব্দটি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এমনকী হোয়াইট/হোয়াটনিং, লাইট/লাইটনিং-এর মতো শব্দও বাদ দেওয়া হবে সংস্থার সমস্ত বিপণন পণ্য থেকে।’ এই বিষয় নিয়ে নানান তর্জা চলার পর এই সিন্ধান্তে আসার পরবর্তী সময়তে ইউনিলিভার বিউটি অ্যান্ড পার্সোনাল কেয়ার-এর প্রেসিডেন্ট সানি জৈন বলেন, ‘আমরা সবরকমের স্কিন টোন এবং ত্বকের সমস্ত সুরক্ষার বিষয়ে বিশ্বের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখন সেই সময় যখন সৌন্দর্য্য এবং তার বৈচিত্রকে আরও বৃহত্তরভাবে উদযাপন করা উচিত। আমরা দেখলাম ফেয়ার, হোয়াইট, লাইট- এই শব্দগুলি একটি আদর্শকে বারবার নির্দেশ করছে। আমাদের এটা ঠিক মনে হয়নি। আর সেটাই আমরা জানাতে চাইছি।’
তাহলে এবার তো প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, এতদিন যাবৎ এই নামের ধারা কি ভাবে চলে এল ? সানি জৈন জানান যে, এই প্রোডাক্টের বিজ্ঞান, প্যাকেজিং সবকিছুতেই বদল আনা হবে। সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুসারে,চলতি মাসের ১৭ তারিখ পেটেন্ট ডিজাইন এবং ট্রেডমার্কের কন্ট্রোলার জেনারেলের কাছে নাম বদলানোর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’-র বদলে ‘গ্লো অ্যান্ড লাভলি‘ নামের প্রস্তাব জানিয়েছে ইউনিলিভার।
সম্প্রতি দেশে-বিদেশের বিভিন্ন জায়গাতেই এই বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে তুমুল বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন জনগণেরা। যার চাক্ষুস প্রমান মিলেছে আমেরিকাতে। এছাড়াও ইতিমধ্যেই শাদি ডট কমের মতো ম্যাটরিমোনিয়াল সাইটেও ‘স্কিন টোন’ ফিল্টার অপশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।যাতে কেউ প্রতারিত না হতে পারে। তবে এর আগে অন্য এক বহুজাতিক সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন ভারত-সহ এশিয়ার দেশগুলিতে এই ফর্সা হওয়ার ক্রিম বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তাররেই আজকের দুনিয়ায় এইসব তথাকথিত ক্রিমগুলি বেশ ব্যবসা করছে।