রাজ্যজুড়ে মহা আড়ম্বরে চলছে মাতৃআরাধোনার জোর প্রস্তুতি
আজ আলোর উৎসবে মেতেছে গোটা শহর, মাতৃপীঠে সামিল ভক্তরা

পল্লবী কুন্ডু : আজ আলোর উৎসবে মেতেছে গোটা শহর। ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে কালী মায়ের আরাধনা। সাঁঝের বেলা দীপ জ্বলবে গৃহস্থের ঘরে ঘরে। এবার সময় এসেছে আঁধার কাটিয়ে আলোয় ফেরার। আর আজকের এই দীপান্বিতা অমাবস্যায় তারাপীঠে (Tarapith)ভক্তদের ঢল। তারাপীঠে মা তারা কালী রূপে পুজিত হন। আজ, শনিবার ভোরে মাকে স্নান করে শীতল আরতি করা হয়েছে। আজ সকাল ১১টা ৪৪ মিনিট থেকে অমাবস্যা। শেষ হবে সোমবার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। দুপুরের অন্ন ভোগে থাকে পাঁচ রকমের ভাজা, পোলাও, খিচুড়ি, শোল মাছ পোড়া, বলির মাংস, চাটনি, পায়েস মিষ্টি। সন্ধ্যা আরতির সময় দেওয়া হয় লুচি, মিষ্টি। রাতে মহা ধুমধামে নিশিপুজো। কালীপুজোয় শক্তিপীঠে হাজির হয়েছেন মায়ের সাধকরাও।
শুধু তারাপীঠেই নয় আজ কালী মায়ের আরাধনায় সামিল হয়েছেন গোটা রাজ্য। শহর থেকে জেলা, সর্বত্রই এক ছবি। আজকের এই পুন্য তিথিতে টালীগঞ্জের করুণাময়ী কালীমন্দিরে(Sri Sri Karunamoyee Kali Temple) দূরদুরান্ত থেকে ভিড় জমিয়েছেন ভক্তরা। ২৬০ বছরে পা দিল এই মন্দিরের পুজো। ভোর ৪টেয় মঙ্গলআরতি করে পুজোর সূচনা হয়েছে। এখানে কালীপুজোর দিন কুমারী পুজোরও আয়োজন করা হয়। ২০০৯ থেকে এই মন্দিরে কুমারী পুজো শুরু হয়। পাশাপাশি করুণাময়ী কালীমন্দিরে ভোগ হিসেবে আমিষ ও নিরামিষ দু’ধরনের রান্নাই করা হয়। আমিষে ১১ ধরণের মাছ রান্না করা হয়।
ঠিক এরপরেই যদি একটু অন্যদিকে নজর দেওয়া যায় তবে ঠনঠনিয়ার শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের(Shree Shree Siddheshwari Kali Temple) পুজো এবার ৩১৬ বছরে পা দিল। প্রতি বছরের মতো সকাল থেকে পূন্যার্থীদের ভিড় মন্দির চত্বরে। রাত সাড়ে এগারোটা থেকে মূল পুজো শুরু হলেও, সকালেও পুন্যার্থীদের পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। বেলা একটা নাগাদ মন্দিরের দরজা বন্ধ হবে, ফের দুপুর তিনটে নাগাদ খোলা হবে মন্দিরের দরজা। পুজো চলবে ভোর পর্যন্ত। এই মন্দিরের বৈশিষ্ট্য হল, দর্শনার্থীদের জন্য শুকনো ভোগ দেওয়া হয়। লুচি ছোলার ডালের ব্যবস্থা থাকে ভোগে। পাশাপাশি মায়ের ভোগ রান্না হয় তিনদিন ধরে। শুক্রবার থেকে সেই ভোগ রান্না শুরু হয়েছে।
আর এবার যদি কথা আসে দক্ষিনেশ্বর নিয়ে তবে ১৮৫৫ সালের ৩১ মে হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে রানি রাসমনি প্রতিষ্ঠা করেন দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর মন্দির। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একাধিক কাহিনি। প্রতি বছরই কালীপুজোর দিন ভক্তদের ঢল নামে মন্দিরে, তবে এ বছর চিত্র খানিক ভিন্ন। তবে এসবকিছুর পর বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভুললে চলবে। একদিকে যেমন মায়ের আরাধনাও করতে হবে অন্যদিকে নজর রাখতে হবে নিজেদের সুরক্ষার দিকেও। মাস্ক এবং স্যানিটাইজার অতি আবশ্যক এই উৎসবের দিনে।