হাতের ট্যাটুতে লেখা ছিল ৭৮৬, তাই নির্মমভাবে হাত কাটা হল মুসলিম যুবকের !
সারা রাত চলে তুমুল অত্যাচার, প্রাণভিক্ষা চেয়েও হয় না লাভ

দেবশ্রী কয়াল : এ কোন সমাজ তৈরি হচ্ছে ? যেখানে হাতে আঁকা ট্যাটুর জন্য পেতে হচ্ছে শাস্তি ! হাতে লেখা ছিল ঈশ্বরের নাম, কিন্তু সে জন্য কারণেই যে তার হাত কাটা যাবে তা কল্পনাও করতে পারেনি সেই মুসলিম যুবক। সেই ঘটনাই সোশ্যাল মিডিয়াতেই হয়েছে ভাইরাল। বিচার চাওয়া হচ্ছে যেখানে এই নির্মম অপরাধের জন্যে।
একলাখ সালমানি পেশায় নাপিত, বয়েস মাত্র ২৮। লকডাউনে কাজ নেই তাই গত ২৩শে আগস্ট সাহারানপুর থেকে দুই চেনা ব্যক্তির সঙ্গে পানিপথে রওনা হন। ৩৩ কিলোমিটার চলার পর কৃষ্ণপুর অঞ্চলে কোথাও আশ্রয় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত যান এক পার্কে। সেখানে রাতের অন্ধকারে তার নাম পরিচয় জানতে চায় দুই যুবক। অভিযোগ ওঠে, যুবক নাম বলতেই নাকি ব্যাপক মার খান। তবে এখানেই কিন্তু এই ঘটনার শেষ নয়।
অভিযোগ ওঠে, মারের চোটে দীর্ঘক্ষণ অচৈতন্য থাকার পর সামনের এক বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থাতেই জল চাইতে যান তিনি। কিন্তু কপালে ছিল বোধ হয় আরও খারাপ কিছু, তাই দরজা খোলে ওই দুই যুবকই। এরপর আরও বাড়ে অত্যাচারের সীমা, তাদের কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েও হয় না লাভ। একলাখ এর উপর ক্রমশ অত্যাচার চালিয়ে যায় ওই দুই যুবক। তখনই তাদের চোখে পড়ে একলাখের হাতে একটি ট্যাটুতে লেখা ৭৮৬। এই সংখ্যাটি ‘বিসমিল্লা’ শব্দেরই প্রতিরূপ। তা দেখেই ওই দুই যুবক সিদ্ধান্ত নেয় তার হাত কেটে দেওয়ার। এরপর একলাখকে ফেলে আসা হয় কিষাণপুর রেল স্টেশনের ধারে। পরদিন জ্ঞান ফিরতে একলাখ পথচারীদের সাহায্যে নিজের বাড়িতে খবর দেন।
এই ঘটনার পর অভিযোগ দায়ের করা হয় পানিপথের চাঁদনি বাগ স্টেশনে। একলাখের দাদা একরাম সালমানির বক্তব্য, ‘আমার ভাইয়েকর জীবনটা ধ্বংস হয়ে গেল। ওরা শুধু হাতই কাটেনি, ওর সমস্ত স্বপ্ন মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। হয়তো কোনওদিনই আর কোনও কাজ করতে পারবে না। আমি এর বিচার চাই।’ তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর থেকে ঘটনার সত্যতা জেনেছেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই তার বীভত্সতা নিয়ে শোরগোল উঠেছে। নেটিজেনরা একলাখের হয়ে বিচার চাইছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও হচ্ছে সোচ্চার।