পড়াশোনাতে থাকবে না কোনো বাঁধা, স্কুল নেবে না ভর্তির ফি
ভর্তির ফি দেবে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীরা, অভিভাবকদের উপর দিতে চান না তারা চাপ

দেবশ্রী কয়াল : করোনার (Corona)জেরে অর্থনীতিতে পড়েছে ব্যাপক প্রভাব। করোনা এবং লকডাউন (Lockdown)এই দুইয়ের কারনে আজ আনলক পর্যায়েও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অর্থনীতি। বহু মানুষের চাকরি চলে গিয়েছে। অনেকের ব্যবসায় দেখা দিয়েছে বেশ মন্দা। যাদের দিন মজুরির কাজ এখনও তাদের অনেকেরই বকেয়া মাইনে রয়েছে বাকি। নতুন করে কাজ শুরু না হওয়ার কারনে হয়ে রয়েছেন বেকার। এদিকে শিক্ষাক্ষেত্রেও পড়েছে এর প্রভাব। যখন মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়েছে তখন বেশ কিছু স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তারা এই মন্দার বাজারেও বাড়াচ্ছে স্কুলের ফি। যাতে স্কুলের ফি না বাড়ানো হয় এবং বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তা কমানো হয় তার আবেদন বহুবার সামনে উঠে এসেছে। এমনকি এই বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ ও হয়েছে। তবে এমন সময়ে মানুষের কথা ভেবে এক আলাদা পথে হাঁটল হাওড়ার প্রসস্থ দুর্লভ চন্দ্র সাহা বিদ্যাপীঠ। টাকার কারনে যাতে কোনো পড়ুয়ার পড়াশোনাতে বাঁধা না সৃষ্টি হয় সে কারনে ফি (School Fee) না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।

হ্যাঁ, এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়ার এই স্কুল। পড়ুয়ারা যাতে ভালো ভাবে বিনা কোনো বাঁধার সাথে নিজেদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সেই জন্যে এবার নতুন ক্লাসে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে কোনোরকম ফি নেবে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। বছরের শুরুতে অভিভাবকদের থেকে যে টাকা নেওয়া হয় তা এবার দিয়ে দিচ্ছেন স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরাই। স্কুলের একটি নির্দেশিকাযতে জানানো হয়েছে, শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের তরফে পড়ুয়াদের সমস্ত খরচ বহন করা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন অভিনব সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন অবিভাবকরা।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ”আমাদের স্কুলে ক্লাস ফাইভ থেকে ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত পড়ানো হয়। স্কুলে প্রায় সাড়ে সাতশো ছাত্রছাত্রী আছে। এবং অধিকাংশই পড়ুয়ারাই প্রান্তিক শ্রেণির। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী এই স্কুলে ২৪০ টাকা বছরে একবারই দিতে হয় ভর্তির সময়। যা হয়ত সামান্য। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা জোগাড় করাও অনেকের কাছেই সমস্যার, স্কুলের ফি ভরতে হয়ত অনেককেই নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই তাঁদের পাশে দাঁড়াতে আমাদের সকলের তরফে এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে।”