পল্লবী কুন্ডু : সমস্ত কিছুই ধীর ধীরে স্বাভাবিকের পথে। করোনার জেরে বিদ্ধস্ততার ছাপ পড়েছিল সর্বত্র। সেখান থেকে আজ অনেকটাই মাথা তুলে দাঁড়াতে পেরেছে মানবজাতি। তবে এবার দর্শনার্থীদের জন্য নয়া নিয়মে চলবে পুরীর জগন্নাথ মন্দির(Shree Jagannath Temple, Puri)। দীর্ঘ ন’মাস বন্ধ থাকার পরে ২৩ ডিসেম্বর খুলেছিল পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের দরজা। কিন্তু মন্দির কমিটি নির্দেশ দিয়েছিল, ভক্তদের মন্দিরে ঢুকতে হলে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো বাধ্যতামূলক। ৪৮ ঘণ্টা আগের করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেখালে তবেই ভেতরে ঢোকার অনুমতি মিলবে।
তবে এবার নিয়মের কিছুটা বদল। বৈঠকের মাধ্যমে মন্দির কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই নিয়ম তুলে দেওয়া হবে। আগামী ২১ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর করা হবে। পুরীর জেলাশাসক সমর্থ ভর্মা, পুলিশ সুপার কে বি সিংয়ের সঙ্গে গতকালই জরুরি বৈঠক করেছিলেন ‘শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এসজেটিএ) তথা মন্দির কমিটির প্রধান কৃষাণ কুমার। মন্দিরে প্রবেশাধিকার ও কোভিড গাইডলাইন নিয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।
এসবের পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও ভিন্ রাজ্যের পুণ্যার্থীদের ক্ষেত্রে মন্দিরে ঢোকার কী নিয়ম হবে সে ব্যাপারে আলোচনা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত হলো, আগামী ২১ জানুয়ারি থেকে মন্দিরে প্রবেশে আর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট দেখানোর প্রয়োজন নেই। তবে কিছু নিয়ম মানতে হবে ভক্তদের। ২৩ ডিসেম্বর জগন্নাথ মন্দিরের দরজা খোলার পর থেকে তিনটি ধাপে দর্শনের নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়। মন্দির কমিটি নির্দেশ দেয়, ২৬ ডিসেম্বর অবধি শুধুমাত্র মন্দিরের সেবায়েতদের পরিবারের মানুষেরাই ভেতরে ঢোকার অনুমতি পাবেন।
ঠিক তার পরের ধাপে ৩ জানুয়ারি অবধি মন্দিরে প্রবেশের অধিকার শুধুমাত্র পুরীর স্থানীয় লোকজনদের। তবে মন্দির চত্বরে যাতে অযথা ভিড় না জমে যে বিষয়টিকে কড়া নজরে দেখা হবে। কোনদিন কোন কোন ওয়ার্ড থেকে ভক্তরা মন্দিরে ঢুকতে পারবেন সে তালিকাও তৈরী করে দেওয়া হবে। তৃতীয় পর্যায়ে ৩ জানুয়ারির পর থেকে ভিন রাজ্যের দর্শনার্থীদেরও ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে।
সাথে অবশ্য মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা রিপোর্ট না দেখালেও কিছু নিয়ম মানতে হবে, বয়স্কদের জন্য মন্দিরে ঢোকার আলাদা লাইন করা হবে। সেখানে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁড়াতে হবে।মন্দির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, দর্শনার্থীদের সহযোগিতা ভীষণভাবে প্রয়োজন। আগে মন্দিরের ভেতরে যেভাবে ভিড় হত এখন তা একেবারেই বন্ধ। মন্দিরের ভেতরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সোশ্যাস ডিস্টেন্সিংয়ের নিয়ম মেনেই হবে দর্শন।মন্দিরের ভেতরে প্রদীপ বা ফুল নিয়ে যাওয়া চলবে না। ভোগ বিতরণের ক্ষেত্রেও নিয়ম মানবে মন্দির কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন ৩০ হাজার দর্শনার্থীকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে। তবে কোভিড প্রটোকল কড়াভাবে মানতে হবে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ যখন নিজেই ভক্তদের জন্য বেশকিছু সুযোগ-সুবিধার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তখন মন্দিরে আগত সকল দর্শনার্থীদেরও সে বিষয়ে মন্দির কমিটির সাথে সহযোগিতা করাই একান্ত কাম্য বলে মনে করছেন ওড়িশা প্রশাসন।