লকডাউনের পরে বিপুল হারে বেড়েছে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা, পশ্চিমবঙ্গ শিশুসুরক্ষা অধিকার আয়োগ-এর চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী
মল্লিকবাজার থেকে পাঁচ শিশুকে উদ্ধার করলো পার্কস্ট্রিট থানা

পল্লবী কুন্ডু : এবার মল্লিকবাজার(Mallickbazar) থেকে পাঁচ শিশুশ্রমিককে উদ্ধার করল পার্ক স্ট্রিট থানা(Park Street Police Station)। গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকানে কিশোরদের কাজ করতে দেখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, তারপরেই ‘বাচপান বাচাও আন্দোলন’ পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানায়। তড়িঘড়ি অভিযান চালিয়ে পাঁচ শিশুকে উদ্ধার করে তাদের হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পার্ক স্টিট থানা সূত্রে প্রাপ্ত খবর, খুব সামান্য টাকার বিনিময়ে মল্লিকবাজারের বিভিন্ন দোকানে কাজ করত ওই পাঁচ শিশু। দালাল মারফত তাদের বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতায় আনা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
দীর্ঘ সময়ের বিরতির পরেই যেন কলকাতায় শিশুশ্রমিকদের আনাগোনা যে বেড়েছে তা মানছেন পশ্চিমবঙ্গ শিশুসুরক্ষা অধিকার আয়োগ-এর চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তিনি বলছেন,”করোনার কারণে বহু স্কুল বন্ধ। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর মানুষের পেটে ভাত নেই। যে সব শিশু স্কুলে যাচ্ছে না, তাদের মধ্যে অনেকেই সংসারের প্রয়োজনে কাজে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরাও নজরদারি চালাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
এদিকে, উদ্ধার হওয়া শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দিনরাত হাড়ভাঙা খাটুনির পরিবর্তে মালিক তাদের মাসে দু থেকে তিন হাজার টাকা হাতে দিত। যে সব দোকানে তারা কাজ করত, সেখানকার মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বুধবার দুপুরে পাঁচ শিশু ও কিশোরকে উদ্ধারের পর শিশু অধিকার সুরক্ষা আইনে মামলা করে তদন্তে নেমেছে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। পাশাপাশি, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এ ভাবেই ভিন রাজ্য থেকে আসা শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। গত এক বছরে এমন অনেক ঘটনা তাদের নজরে পড়েছে। সাথে সংস্থা আরো জানাচ্ছে, পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরে ওই সব ঘটনায় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
লোকডাউনের পরে সম্প্রতি, ময়দান থানা এলাকা থেকে ২১ জন শিশুশ্রমিককে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রধানত বিহার, ঝাড়খন্ড থেকে দালাল চক্রের মাধ্যমে তাদেরকে কলকাতা আনা হয় বলে জানা যাচ্ছে। এই খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ওই চক্রের মূল পান্ডাদের সন্ধানে রয়েছে কলকাতা পুলিশ।