‘বাস্তবের মোগলি নাম তার এলি’
বাস্তব আর স্বপ্নের ফারাক হয়তো এখানেই ! জনসমাজে রীতিমতো উপেক্ষিত 'বাস্তবের মোগলি'

পল্লবী কুন্ডু : ছোট বেলা থেকেই মোগলি-কে নিয়ে বড়ো হয়ে ওঠা সকলের। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় “দ্য জঙ্গল বুক”(The Jungle Book)-এর স্টোরি না শুনলে যেনো ঘুমই আসতে চায়না। মোগলি (Mowgli) হলো সকলের অত্যন্ত ভালোবাসা এবং স্নেহের একটা চরিত্র। আর তার গল্প শুনেই মন চায় সেই অচেনা রূপকথার দেশে পাড়ি দিতে। যেখানে চেনা জীবনের বাধ্যবাধকতা নেই, আছে শুধুমাত্র নিষ্পাপ কিছু মুখ। আচ্ছা গল্পের মোগলি-কে আমরা তো কখনোই কাছে পাবোনা। কিন্তু যদি বাস্তবের মোগলিকে কাছে পাওয়া যায় তবে কি তার কদরটা গল্পের মতোই হবে নাকি বাকিদের মতো এই সমাজও তাকে দূরে সরিয়ে রাখবে ?

ইন্দোনেশিয়ার (Indonesia) রাজধানী জাকার্তায় থাকেন মোগলি। না না রূপকথার নয়, বাস্তবের মোগলি। তার নাম এলি। সে এখন বাল্য অবস্থা থেকে বেরিয়ে কৈশোর পেরিয়ে এখন যৌবনে পা রেখেছে। সে এখন ২১ বছরের এক সাবালক। তবে এলির মোগলি হয়ে ওঠার কাহিনীটা কিছুটা অন্যরকম। ছোটবেলা থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত সে ! এই রোগই এলিকে মোগলি বানিয়ে দিয়েছে, বাস্তবের মোগলি। এলি অন্যান্য সাধারণ যুবকের মত নয়। তার চেহারা, হাবভাব সাধারণ মানুষের থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।
সে মানুষের মধ্যে নয়, বন জঙ্গলে থাকতেই সব চেয়ে বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করেন। আর তাই সভ্য সমাজের মধ্যে সে যেন বড়ই বেমানান। অনেকেই তাকে পছন্দ করেন। ছোটরা তাকে “বাঁদর” বলে খেপায়। বড়রাও তার প্রতি মোটেই সন্তুষ্ট নয়। বড়দের থেকে মারধোর খেতে হয় তাকে। একমাত্র মায়ের কাছেই সে খুঁজে পায় গোটা পৃথিবীর স্নেহ। খাবার-দাবারের প্রতিও প্রচন্ড অনিহা রয়েছে এলির। রান্না করা খাবারের তুলনায় কাঁচা শাকসবজি, ফলমূল খেয়েই জীবন ধারণ করে সে। সারাদিন জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে ঘাস, পাতা, ফলমূল বিশেষ করে কলা খেতে খুব ভালোবাসে সে।
এলি হলেন তার মা-বাবার ষষ্ঠ সন্তান। আগের পাঁচ সন্তানের অস্বাভাবিক কারণে মৃত্যু হওয়াই অনেক সাধনা করে ভগবানের থেকে যেন আশীর্বাদস্বরূপ এলিকে পান তারা। কিন্তু সেই সন্তান আর পাঁচটা সাধারণ সন্তানের মত হলো না। বাস্তব দুনিয়ার মোগলি জনসমাজের কাছে অসস্থিকর। গল্পের মোগলি-ই কেবল মানুষের মনে জায়গা পেয়েছে, বাস্তবের মোগলি মোটেই নয়। কারণ সে বাস্তবিক !