ইলিশ না পাওয়ায় ও দাদনের দায়ে, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত জেলেদের এখন মলিন মুখ
নিস্তব্ধ ঘাট ! মেঘনায় দেখা নেই ইলিশের

চৈতালি বর্মন : বাঙালির কাছে মাছ এর কথা উঠলেই সবার আগে উঠে আসে ইলিশ মাছের(Hilsa fish) কথা। শুধু বাঙালি নয় অন্য মানুষদের কাছেও খুব প্রিয় একটি মাছ। আবার অনেকের কাছে খুব একটা পছন্দের নয়। ‘মেঘনা(Meghna)য় গত এক সপ্তাহে জাল বাইয়া মাত্র চার হাজার টাকার মাছ পাইছি। নদীতে মাছ না পাওয়ায় অভাব-অনটনের মধ্যে আছি।’ এভাবেই বলছিলেন বশির নামে এক জেলে।জেলে হারুন মাঝি বলেন, নদীতে মাছ নাই, তাই মাছ ধরতে যাওয়ারও আগ্রহ কমে গেছে। গত দুইদিন নদীতে যাইয়া ৮শ থেকে ১ হাজার টাকার মাছ পাইছি। গত কয়েকদিনে অনেক টাকা দেনা হইয়া গেছি। এমন হইলে কীভাবে দিন কাটবো?নদীতে ইলিশ সংকট নিয়ে এমন সমস্যা শুধু বশির ও হারুন মাঝির নয়, এমন সমস্যা এখন ভোলার বেশির ভাগ জেলের।
জেলেরা জানান, প্রতি বছরই অভিযানের পর নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়তো। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ছে না। এতে দুর্দিন চলছে জেলেদের।।ভোলা সদরের তুলাতলী এলাকার কাসেম মাঝি বলেন, নদীত মাছ খুবই কম, তেল খরচও ওঠে না। মাছ পাওয়ার আশায় ৫ জেলে নিয়ে নদীতে গিয়ে পেয়েছি মাত্র ৭শ টাকার মাছ, এতে আমাদের পুষছে না। পরিবার নিয়ে অভাবে দিন কাটছে। এদিকে মাছ না পাওয়ায় ইলিশের ঘাটগুলোতেও কোলাহল কমে গেছে। জেলে, পাইকার ও আড়তদারদের হাক-ডাকে যেসব ঘাট মুখরিত থাকতো, সে সব ঘাট এখন অনকেটাই নিস্তব্ধ।
ইলিশা বিশ্বরোড এলাকার মত্স্য আড়তদার মো. সামসুদ্দিন বলেন, গত এমন দিনে আমাদের এখানকার আড়তগুলোতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা হতো। কিন্তু এখন হচ্ছে মাত্র ১ লাখ টাকার। এতে আমাদের মতো জেলেরাও লোকসানের মুখে পড়েছেন।এ ব্যাপারে ভোলার সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নভেম্বর মাসের শেষ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক মাস সাধারণত তেমন মাছের ধরা পড়ে না, তবে জানুয়ারি থেকে মাছ ধরার পড়বে বলে আমরা মনে করছি।তিনি বলেন, এবার আমাদের ইলিশ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। জানুয়ারি থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার পড়লে, আশা করি ইলিশ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হবে।