অভিনব রূপে ফিরছে মহানগরীর অতীত ঐতিহ্য, আসছে ‘পাট রানী’
ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন কলকাতার বুকে ফেরাচ্ছে ট্রামকে

পল্লবী কুন্ডু : বর্তমানে আধুনিকতার যুগে, পুরোনো আবেগ গুলো যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। মহানগরীকে সাজিয়ে তোলার অন্যতম সরঞ্জাম হলো ট্রাম(Tram)। তবে এই আধুনিকতার যুগে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে ট্রাম। কলকাতার(Kolkata) অন্যতম ঐতিহ্য ট্রাম প্রায় মুছে যেতে চলেছে এই তিলোত্তমার বুক থেকে। তবে বললেই হলো এত সহজে সেই ঐতিহ্য-কে কখনোই ভুলতে দেওয়া চলেনা। তাই হারিয়ে যাওয়া কলকাতার ঐতিহ্যকে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
ট্রামকে এক নয়া আঙ্গিকে ফিরিয়ে আনার এই রাজদায়িত্ব পালন করবে ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন(West Bengal State Transport Corporation)। ট্রামের নয়া রূপদানের পদ্ধতিও খানিক ভিন্ন হতে চলেছে। এবার সংশোধনাগারের বন্দিদের তৈরি পাটের হস্ত শিল্প দিয়ে নতুন সাজে সেজে উঠতে চলেছে শহরের ঐতিহ্যবাহী পরিবহন মাধ্যম ট্রাম। এই বিষয় নিয়ে জানা যাচ্ছে, এই ট্রামের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পাট রানী’। দমদম সংশোধনাগারের বন্দিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে সোনালি পাটের বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ট্রামকে।
এই অভিনব উদ্যোগ ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন-এর হলেও পাটের সামগ্রী সরবরাহ করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পাশাপাশি যান যাচ্ছে, এই নতুন ট্রাম চালু হবে আগত দীপাবলীর আগেই। বিভিন্ন পাটের সামগ্রী দিয়ে সেজে ওঠা এই ট্রামে থাকবে ক্যাফেটেরিয়া। পাওয়া যাবে পানীয় জল, জুস ও স্ন্যাক্স। ট্রামে চলবে বাংলা গান। যাত্রাপথে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থানগুলির ধারা বিবরণী দেওয়া হবে। ট্রামের মধ্যে অবশ্যই এসি’র ব্যবস্থা থাকবে। যা সম্পূর্ণ জেনারেটরে চলবে। যেহেতু ট্রাম লাইনে সাধারণত যে বিদ্যুত পরিবাহিত হয় তা ডিসি কারেন্ট।
সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিং কাপুর মত প্রকাশ করেন যে, ‘অন্যতম সাক্ষী ট্রাম। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে সুষ্ঠু মেলবন্ধন ঘটেছে পরিবেশবান্ধব পাট এবং ঐতিহ্যশালী ও আর একটি পরিবেশবান্ধব মাধ্যম ট্রামের।’অন্যদিকে এই ট্রামে জন প্রতি ভাড়া ধার্য করা হয়েছে মাত্র ১৯৯ টাকা। তবে কেউ যদি শ্যামবাজার থেকে এসপ্ল্যানেড হয়ে গড়িয়াহাট পর্যন্ত পুরো সফরের জন্য এই ট্রামটি বুক করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ পড়বে ২৫০০ টাকা। অতএব যাতে সব শ্রেণীর মানুষই অন্তত একবার এই অভিনব প্রয়াসের অংশীদার থাকতে পারে সেই দিকেও নজর রেখেছে কর্তৃপক্ষ। আর এই মুহূর্তে এই ট্রামের প্রস্তুতি পর্ব চলছে নোনা পুকুর ট্রাম ডিপোতে।