অমানবিকতার জ্বলন্ত উদাহরণ ! প্রথমে লাথি, ঝাঁটা তারপর রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হলো বিধবা মা-কে
বাড়ি এবং জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিধবা মাকে শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ উঠলো ছেলে ও বৌমার দিকে।

পল্লবী কুন্ডু : ফের নির্যাতন-এর মতো অমানবিক ঘটনা সৃষ্টি করলো চাঞ্চল্য। বাড়ি এবং জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিধবা মাকে শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ উঠলো ছেলে ও বৌমার দিকে।ওই বিধবার ওপরে চলেছে লাথি, ঝাঁটা বাদ যায়নি কিছুই। এই নির্যাতনের জেরে ওই মহিলাকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় হাসপাতালে।বসিরহাট মহাকুমার হাসনাবাদ থানার পাটলি খানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের ঘটনা।
২ তারিখ, শুক্রবার নিজের ছেলে ও বউয়ের নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উত্তর চাঁদিপুরের বছর চল্লিশের সালেয়া বিবি। পুলিশসূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক আগে মহিলার স্বামী আব্দুর রহমান গাজি মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে বিধবার শেষ সম্বল তাঁর আড়াই কাঠা জমি আর বাড়ি। পরিবারে মানুষ বলতে বিধবার একমাত্র ছেলে ইসমাইল গাজি এবং বৌমা খাদিজা বিবি। কিন্তু শ্বশুরের মৃত্যুর পর থেকেই শাশুড়ি সালেয়া বিবির উপর তাঁর পুত্রবধূ কারণে অকারণে দিনের পর দিন অকথ্য অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ। শুধু পুত্রবধূই নয়, গত তিন বছর ধরে নানা অজুহাত খাড়া করে বিভিন্ন সময়ে বিধবা মাকে মারধর করে ছেলে নিজেও।
এরূপ নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে কখনো কখনো মেয়ের বাড়ি চলে যেতেন তিনি। তবে বাড়ি ফেরার পর সেই একই ঘটনা। আক্রান্ত মহিলার কথা অনুসারে, কলকাতায় বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে ছেলে ও বৌমার হাতেই উপার্জনের টাকা তুলে দিতেন তিনি। কিন্তু নির্যাতন কমা তো দূর, তারপরও দিনের পর দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে। করোনা আবহে লকডাউন শুরু হওয়ায় কলকাতার কাজ হারান সালেয়া বিবি। অন্যদিকে ছেলে ও বৌমা দাবি জানাতে থাকে, মায়ের নামে যে আড়াই কাঠা জমি ও বাড়ি আছে সেটা তাদের লিখে দিতে হবে। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মানসিক নির্যাতন, অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায় মহিলার উপর।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত্রে সেই নির্যাতনের মাত্রা হয় গগন স্পর্শী।পাশাপাশি রাতের অন্ধকারে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করেও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। ছেলে বৌয়ের সঙ্গে বৌমার বাপের বাড়ির লোকজনও এই ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ওই মহিলা।আক্রান্ত সালেয়া বিবিকে বৃহস্পতিবার রাতেই টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আপাতত ওই হাসপাতালেই চিকিত্সাধীন রয়েছেন।আজকের দিনে দাঁড়িয়ে গাড়ি, জমি সব থেকে বড়ো আর যে মা দশ মাস দশ দিন নিজের দেহে রেখে তারপরেও ছোট থেকে বড়ো করছেন তাদের সামান্যতম মূল্য টুকু নেই আজকের দিনে। সত্যিই আজব সমাজ !