পল্লবী কুন্ডু : বর্তমান যুব সম্প্রদায় খানিক হাসির খেয়ালেই একথা বারংবার বলে থাকে যে, ‘আই ফোন, ও বাবা… কিনতে গেলে তো কিডনি বেঁচতে হবে’। কিন্তু একথা যে সত্যি হবে তা কল্পনারও বাইরে। এক ২৬ বছরের চিনা যুবক পুরোপুরি শয্যাশায়ী, কেন জানেন ? ২০১১ সালে একটি আইফোন ৪ (iPhone 4 ) এবং একটি আইপ্যাড ২ (iPad 2)কেনার কারণে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করে দিয়েছিলো ওই যুবক।
নাম ওয়াং শ্যাংকুন। ২০১১ সালে তাঁর বয়স ছিল ১৭। অ্যাপল সংস্থার ওই দুটি যন্ত্র হাতে পেতে একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছিল সে। এদিকে তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অ্যাপলের ওই মহামূল্যবান যন্ত্র কিনে দেওয়া তার পরিবারের ক্ষমতার বাইরে। এই সময়ই অনলাইনে একটি অঙ্গদানের বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছিল তাঁর। দেখা মাত্রই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁর একটি কিডনি বিক্রি করে দিয়ে, তার বিনিময়ে পাওয়া অর্থেই সে তার মনের সাধ পূরণ করবে।
তারপরেই সে অনলাইন চ্যাটেই ওই অঙ্গ সংগ্রহকারীর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন শ্যাংকুন। চিনের হুনান প্রদেশের একটি ক্লিনিকে হয়েছিল অবৈধ অস্ত্রোপচার। সেইসময় শ্যাংকুন ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক। ক্লিনিক থেকে তাঁর বাবা-মা’এর সম্মতিও নেওয়া হয়নি। তবে শ্যাংকুন-এর তাই নিয়ে কোনও মাথাব্যথা ছিল না। কারণ, তাঁর ধারণা ছিল, একটি কিডনিই যথেষ্ট। হাতে এসেছিল কড়কড়ে ২০,০০০ ইউয়ান, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। হ্যাঁ এই মূল্য তার সাধ পূরণের জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু, সে নিজের অজান্তেই বাজি রেখে ফেলেছিলেন নিজের জীবনকেই।
মাসখানেক যেতে না যেতেই তাঁর অবশিষ্ট কিডনিতে সংক্রমণ হয়েছিল। যা থেকে ধীরে ধীরে সেই কিডনিটি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। দ্রুত তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। এক সময়ে বিছানা থেকে নামার ক্ষমতাও হারান তিনি। এখনও সেই অবস্থাতেই পড়ে আছেন তিনি। প্রতিদিনই ডায়ালাইসিস করার প্রয়োজন হয়।
সম্প্রতিকালে যুবসম্প্রদায়ের কাছে জিনিসের প্রতি আগ্রহ এক নেশায় পরিণত হয়েছে। তাই এখনি সচেতন হওয়া অতিআবশ্যক।