চোরা স্রোত বইছে : বুঝতে পারছে কি CPM-INC / BJP

হাওয়া বদলের পালা পরিবর্তনের শুরু। কাজের লোক কাছের লোক নামাতে পারলে কেল্লা ফতে । মরা গাঙে জোয়ার আসতে পারে।

নগর কীর্তন : গতকাল TMC বিগ্রেড শেষে রাজ্যের মানুষের কাছে অনেক প্রশ্ন আর এই উত্তর যদি CPM-INC / BJP দিতে পারে মানুষের কাছে, তাহলে ফিরতে পারে ৭৭ এর অবস্থান ‘ নিঃর্শব্দে পরিবর্তন । গতকাল যে বক্তব্য রেখেছেন মমতা ব্যানার্জী , তাতে ২০১৪ / ২০১৯ সালের ব্রিগেট বক্তিতার থেকে ধার অনেক কম। কোনো দিশা নেই গতকালের বক্তব্যের মধ্যে , শুধু ED / CBI /INCOME tax এর কথা ভয় থেকে আত্মরক্ষা মূলক অবস্থান । প্রশ্ন উঠছে এই এজেন্সিরা কেন TMC কে ভয় দেখাবে , যদি কোনো কিছু না করে থাকেন।

নেতা নেত্রীদের আবেদনে সে ভাবে ছিল না সাধারণ মানুষের সাড়া। গত কালের মাঠের ভিড়ে ছিল অনেক সমালোচনা , নজর দিলে দেখা যায় যখন মমতা ব্যানার্জী মঞ্চে প্রবেশ করলেন তখন আগের মত উৎসাহ দেখা গেল না সমর্থকদের মধ্যে। মঞ্চে দুই নেত্রী শশী ও চন্দ্রিমা বেশ মুন্সিয়ানার সাথে ঘোষণার মধ্যে বার বার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন , “হাত তালি কোথায় ?”

কেন ফ্যাশন শো করে মানুষের মধ্যে যেতে হল ১৩ বছর রাজ্য চালানোর পর , তাহলে কি সম্পর্ক টা হালকা হয়েছে। TMC দলের আর্থিক অবস্থা ভালো নয় কারণ নির্বাচনী বন্ডের পাওয়া টাকা আর ব্যবহার করতে পারবে না , প্রোমোটার -রোড কন্ট্রাক্টারও অনেকে কাছাকাছি আর আসছে না। এর ফলে বিপুল খরচের মুখে দল, ফলে কে যোগালো এত টাকা?

TMC দলের আরো একটা বড় শক্তি যারা এই রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছে ভোট করা থেকে টাকা তোলার , সেই নিচু তলার থানার অফিসার আধিকারিকরা। শেষের দেড় বছরে না পসন্দের পরিমান বেড়েছে অনেকাংশেই , সামাল দিতে বেশ কিছু পুরস্কার / উৎসাহ দিলেও আগের মত উদ্যোগ নিচ্ছেন না আর। সরকারি কর্মীদের দাবিদাওয়া একটি বিষয় সহ আছে যুক্ত বিপুল পরিমান দুর্নীতিতে যুক্ত আধিকারিকদের দুয়ারে বিপদ।

গত তিন দিনের খবরের কাগজ থেকে টিভি কেও ই সে ভাবে TMC পক্ষে সায় দিচ্ছে না , ২০১১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে এই গদি মিডিয়ার দল। যদিও কলকাতা প্রেসক্লাবের একটা বড় অংশ কাল এই সভায় উপস্থিত থাকলেও সেভাবে নড়া-চড়া করতে দেখা যায় নি। আসলে এই শ্রেণীর গদি মিডিয়ারা আগাম আন্দাজ থেকে তাদের চলার পথ বদলাতে শুরু করেন।

২০১১ পর থেকে যতগুলো TMC ব্রিগেট হয়েছে তাতে দেখা গেছে টালিগঞ্জের সিনেমা পাড়ার ৯০% উঠে চলে আসেন মঞ্চে , কোথায় সেভাবে দেখা গেল না। গদি মিডিয়ার মত এদের কাছেও আগাম খবর যে TMC পালে আর হাওয়া নেই , তাই এই বুদ্ধিজীবীরা একটু দূরে দূরে। এর ফলে ইঙ্গিত টা ভালো নয়। শুভাপ্রসন্ন থেকে সুবোধ সরকার কাওকে চোখে পড়লোনা।

গতকালকে সমর্থকদের মধ্যে দেখা গেল না সে ভাবে আর উৎসাহিত, একটু দূরত্ব রেখে অঞ্চল ভিত্তিক সম্পর্খে বা একটু চাপেই এসেছেন এই সভায়। আগের ব্রিগেট গুলোতে দেখা যেত বড় নেতারা মঞ্চে আসলে মাঠের সার্বিক উৎসাহ বেড়ে যেত , যদিও বিপুল মাত্রায় খরচ সেভাবে আকর্ষণ করতে পারলো না। চোখে পড়ার মত বিষয় ছিল সভা সামলানোর জন্য পেশাদার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দল , যদিও তারা বিপুল অর্থ নিলেও অদক্ষতা প্রকাশ পেয়েছে বারংবার।

কুনাল ঘোষ থেকে অর্জুন , অপরূপা থেকে সুনীল মন্ডল টিকিট পাননি। এর ফলে দলে গুঞ্জন বাড়ছে , আছে চাপা রাগ। গোপনে চলছে যোগাযোগ বিপক্ষের সাথে যদি নির্বাচনের ছাড়পত্র পাওয়া যায়। কান পাতলে শোনা যাচ্ছে BJP এর কাছে বেশি অনুরোধ যাচ্ছে এর পাশাপাশি কংগ্রেসের কাছেও আবদার আবেদন শুরু হয়েছে।

২০১১ থেকে যাদের জন্য একটা আলাদা মঞ্চ থাকতো সেই সব গায়ক -নায়ক -শিল্পী- খেলোয়াড়রা কাল ছিলই না বললেই চলে , ছিলনা প্রতিবারের মত নচিকেতার গান সঙ্গে আরো অনেকে। এর ফলে কি এরাও দূরত্ব তৈরি করছে। মমতা ব্যানার্জী প্রতিবারের ব্রিগেডে অনেকের নাম করেন , এবার সেভাবে কাউকে আর ডাকলেন না।

টিকিট ঘোষণার পর গতকাল অঞ্চল ভিত্তিক মিছিল বেরিয়েছে কিন্তু সেভাবে সমর্থকদের উৎসাহ নেই , যেমন সায়নী ঘোষকে দেখাগেল সোনারপুরের একটি অনুষ্ঠানে। তিনি মাঠে প্রবেশের পর সাধারণ মানুষের থেকে পুলিশের সংখ্যা ছিল বেশ চোখে পড়ার মত , মাঠের ধরে দাঁড়িয়ে আছেন কিছু মানুষ কিন্তু সে ভাবে মোবাইলে ছবি তোলার কোনো হুড়োহুড়ি নেই। এর ফলে অঞ্চলে নেতা দের কাছে ভয়ে হোক আর ভক্তিতে হউক, আছি কিন্তু একটু দূরে দূরে।

এই সুযোগ যদি কাজে না লাগাতে পারে তাহলে এর পর আর সুযোগ পাওয়া খুবই কঠিন। গত কালের ব্রিগেট খুঁজতে চেয়েছে নির্ভরযোগ্য বিশ্বাস মুখ , যে মানুষের সাথে কাজ করবে। কিন্তু TMC এর একটা সামান্য অংশ থাকলেও ৮০% নেতানেত্রীরা একটু দূরত্বের কারণে বিপক্ষের কাছে বড় সুযোগ। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিক্তিকে কি ভাবে ব্যবহার করেন, আর এই অবস্থানকে বিপক্ষ কি ভাবে ২০২৪ এর ভোট কাজে লাগবে এখন সেটাই দেখার ।

Exit mobile version