কেউ দু-মুঠো খাবার দিয়ে বাঁচাচ্ছে প্রাণ, কেউ সেই প্রাণকে মেরেই টুকরো টুকরো করে কাটছে। অদ্ভুত প্রজাতি !
সপ্তাহ ঘুরতে পারলোনা মা হস্তিনীর পর এবার মানুষের শিকার চিতা
পল্লবী : চলতি লকডাউনে নিজের ভাগের থেকেই আশেপাশের সারমেয়দের মুখে অন্য যোগাচ্ছে একাংশ মানুষ। আর একাংশ মেতেছে পশু হত্যার নেশায়। শুধু কি আত্মরক্ষার তাগিদেই হত্যা এই বন্য পশু গুলোকে নাকি এতেই তাদের উচ্ছাস। সম্প্রতি মা হস্তিনীর মৃত্যুতে রীতিমতো প্রতিবাদের আগুনে ফুঁসছে সোশ্যাল মিডিয়া। আবারো সেই মানুষেরই শিকার হলো এক চিতাবাঘ। সেই রেষ কাটতে না কাটতেই এবার চিতাবাঘ পিটিয়ে মেরে তার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলল গ্রামবাসীরা ।
রবিবার সকালে সাংঘাতিক এই ঘটনাটি ঘটেছে অসমের গুয়াহাটিতে । স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, গুয়াহাটির ফাটাসিল রিজার্ভ ফরেস্ট হিলকস এলাকায় চিতাবাঘ ধরার জন্য বে-আইনিভাবে ফাঁদ পেতেছিল স্থানীয় এক বাসিন্দা । সেই ফাঁদে পড়ে চিতাবাঘটি । এরপর এলাকার বাসিন্দারা মিলে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে । এখানেই রেহাই দিলো না তাকে, এরপর মৃত বাঘটিকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে হত্যাকারীরা । ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে । চিতাবাঘটির দেহাংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান হয়েছে । পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে, তাড়া কঠোর শাস্তির মুখে পড়বে । অসমের বন দফতর জানিয়েছে, এটি রাজ্যের পঞ্চম চিতাবাঘের মৃত্যু । এর আগে উত্তর অসমের গোলাঘাট এবং জোরহাটে চারটি চিতাবাঘকে মেরে ফেলে দুষ্কৃতীরা ।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে গুয়াহাটি ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশনের ফরেস্ট অফিসার জিতেন্দ্র কুমার বলেন, “সকালে চিতাবাঘ ধরা পড়েছে খবর পেয়েই বেড়িয়ে পড়েছিলাম, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকেও খবর দিয়েছিলাম, ঘুম পাড়ানি ওষুধ দিয়ে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য । কিন্তু ৭.৩০ মিনিট নাগাদ যখন পৌঁছই তখন চিতাবাঘটি ফাঁদ থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল । ঝিমিয়ে পড়েছিল । এরপর তাকে ছেড়েও দেওয়া হয় । কিন্তু গ্রামবাসীকে আক্রোশের বসে তাকে মেরে ফেলে পিটিয়ে ।”
কেন বার বার মানুষের রোষে প্রাণ হারাতে হচ্ছে এই বন্য প্রাণীদের। এই ঘটনা যে নতুন নয় তা সকলের জানা। কিন্তু কোনো উপায়েই বন্ধ হচ্ছে না এই অমানবিক পশু হত্যার ঘটনা। একেই গোটা বিশ্ব থেকে মুছে যাচ্ছে হাজারো প্রজাতি। সে গুলির মধ্যে অন্নতম চিতাবাঘ যা বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীগুলির মধ্যে একটি। তাহলে মানুষের কি উচিত নয় তাদের পরিবেশকে রক্ষা করা। তা তো করছেই না উল্টে আরো ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে ,কিন্তু তারা এটি বুঝতে পারছেনা যে পরিবেশের এই ধারাকে নষ্ট করে আদতে নিজেদের বিপদই ডেকে আনছে।