রেশন সমস্যার সমাধান করতে এবার খাদ্য সচিবকে সরালেন মুখ্যমন্ত্রী।
রেশন দোকানে জায়গা না থাকলে পাশের কোনও ক্লাবঘরে ব্যবস্থা করে দিতে হবে, নির্দেশ দেন খাদ্য দপ্তরকে।
পল্লবী : করোনার সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে সাধারণের পাশে থাকতে সরকারি পক্ষ থেকে ঘোষিত হয় বিনামূল্যে রেশন দেবে, এতে কার্ড থাকুক আর না ই থাকুক। কিন্তু সে কাজ আর হচ্ছে কৈ। বেশ কিছু স্থানে দেখা যাচ্ছে রেশন পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ এরফলে বাড়ছে সমস্যা।আর এর ফলে এই বিষয় নিয়ে কড়া নজরপাত করছেন রাজ্যের মুখ্যমুন্ত্রী। কিছু জায়গায় হলেও রেশন বণ্টনে গোলমাল হওয়ায় খাদ্যসচিবকে সরাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য জুড়ে ১০০ শতাংশ রেশন বণ্টন সুনিশ্চিত করতে চান। ৯০ শতাংশ জায়গায় রেশন সুষ্ঠুভাবে বণ্টন হলেও ১০ শতাংশ জায়গায় সমস্যা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার নবান্নে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘সামান্য হলেও এই সমস্যা হবে কেন? ছোট্ট রেশন দোকান, খাদ্যশস্য মজুত করার জায়গা না থাকলে তাদের জায়গা করে নিতে হবে।’
এদিন খাদ্য দপ্তরকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, রেশন দোকানে জায়গা না থাকলে পাশের কোনও ক্লাবঘরে ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সেখানে সম্ভব না হলে পুলিশের সাহায্য নিয়ে জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। কিন্তু প্রত্যেককে এক মাসের চাল, গম দিয়ে দিতে হবে বিনামূল্যে। যাঁরা গম নেবেন না তাঁদের ৫ কেজি চাল দিয়ে দেওয়া হবে। বারবার বলা সত্ত্বেও ১০ শতাংশেও বা কেন সমস্যা হবে? কেন সেখানে অর্ধেক রেশন পাবেন? এই সব সমস্যা মেটাতেই খাদ্য দপ্তরের দায়িত্ব নতুন সচিবকে দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এখন খাদ্য দপ্তরের সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন মনোজ আগরওয়াল। নতুন খাদ্যসচিব হচ্ছেন পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি। তিনি অর্থ দপ্তরের বিভাগীয় সচিব এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের সচিব ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার থেকে রেশনে এক কেজি করে ডালও দেওয়া হবে। তা ছাড়া আসন্ন রমজান মাসে প্রত্যেক বছরে যা যা সুবিধা দেওয়া হয় এ বছরেও দেওয়া হবে। প্রত্যেকে তাঁদের প্রাপ্য রেশন পাবেন। ৬ মাস বিনামূল্যেই পাবেন। এই নির্দেশের কোনও নড়চড় হবে না। মাথা পিছু সপ্তাহে ২ কেজি চাল ৩ কেজি গম যাঁরা নিতে চাইবেন দেওয়া হবে। কেউ গম নিতে না চাইলে ৫ কেজি চাল দেওয়া হবে। ১ মাসের রেশন একসঙ্গে পাবেন।’
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ রেশন দোকানের চাল নিজের চাল বলে মনে করছে। এটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কারণ সরকার কৃষকদের কাছ থেকে চাল কিনে নেয়। কেউ কেউ জলঘোলা করার চেষ্টা করছেন। এটা আমরা মানব না। এই বিপদের সময় রাজনীতি করার কোনও মানে নেই। আমরা করছি না, কাউকে করতেও দেব না। মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এখন একমাত্র কাজ। এই বিপদের সময় সরকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।’
উল্লেখ্য, এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রেশন বিলি নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের প্রসঙ্গ ওঠে। এই নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে রেশনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, খাদ্যসচিব মনোজ আগরওয়ালকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। রেশন বিলি নিয়ে একটা অভিযোগও তিনি শুনতে রাজি নন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।