বেহাল অবস্থায় অসম, ক্ষতির হার সীমাহীন
মানুষ থেকে বন্যপ্রাণী প্রকৃতির সাথে লড়াইয়ে কেউই আর পেরে উঠছেনা হারাচ্ছে একের পর এক প্রাণ।
পল্লবী কুন্ডু : ভয়াবহ অবস্থা অসমের। মানুষ থেকে বন্যপ্রাণী প্রকৃতির সাথে লড়াইয়ে কেউই আর পেরে উঠছেনা হারাচ্ছে একের পর এক প্রাণ। বৃহস্পতিবার আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ জন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে খুব সহজেই এটি পৌছে যাবে ১০০ তে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ। অসমের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট তাদের বুলেটিনে এমনটাই জানিয়েছে। তবে একটা দিক থেকে কিছুটা স্বস্তি। অসমের পরিবেশ এবং বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার বন্যায় কম বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এ বছর এই নিয়ে তিন বার বন্যা হয়েছে অসমে। তবে ২০১৯ সালের তুলনায় এ বছর অর্থাত্ ২০২০ সালে বন্যপ্রাণীর মারা যাওয়ার সংখ্যাটা কমেছে।
মন্ত্রী আরো জানিয়েছেন যে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্ক এবং টাইগার রিজার্ভ থেকে ১৪৩টি প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতি বছরই বন্যপ্রাণ উদ্ধারের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি এবং উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে দুর্গত জীবজন্তুকে সময় থাকতে তুলনায় কিছুটা সহজে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু তবুও যে কোটি প্রাণী প্রাণ হারিয়েছে সেই সংখ্যাটাও খুব একটা কম নয়। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে ইতিমধ্যেই জলে ডুবে ১২৩ টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ১২টি একশৃঙ্গ গন্ডার রয়েছে। বাকি পশুদের মধ্যে ৯৩টি হরিণ ও চারটি মহিষ আছে বলে জানা গেছে। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান এবং টাইগার রিজার্ভের প্রায় ৯০ শতাংশ জলে ডুবে গিয়েছে। তবে অসংখ্য বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করে সংরক্ষণাগারেও পাঠিয়েছেন বনদফতরের কর্মীরা। অন্যদিকে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে অনেকে লোকালয়তেও এসে উপস্থিত হয়েছে এর ফলে সেখানেও স্থানীয়দের মধ্যে এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত বন্যায় ডুবে গিয়েছে অসমের ২৬টি জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৮,৩২,৪১০ জন। নতুন করে বন্যার জল ঢুকেছে দধিয়া গ্রামে। প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে একাধিক ঘর-বাড়ি। অসমে বন্যার জলে ভেসে গিয়েছে ১.৪৬ লাখ হেক্টর চাষের জমি। এ বছর বন্যা এবং ভূমিধসে অসমে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১৫ জনের। তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ২৬ জন মারা গিয়েছেন ভূমিধসে। নতুন করে অসমে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি। ইতিমধ্যেই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র-সহ অসমের একাধিক নদী।এখানকার জেলা কমিশনার পল্লব ঝা জানিয়েছেন, চলতি বছর এই নিয়ে তিন বার বন্যা হয়েছে এখনও পর্যন্ত এখানে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। প্রায় ৩০০ গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে এই বন্যায়।